মিয়ানমার নিয়ে সর্বোচ্চ সংযম দেখাচ্ছে বাংলাদেশ : শেখ হাসিনা

মিয়ানমার নিয়ে সর্বোচ্চ সংযম দেখাচ্ছে বাংলাদেশ : শেখ হাসিনা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের প্রভাব নিজ অঞ্চলে পড়ার পরও বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সংযম দেখাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লন্ডনে ব্রিটিশ লেবার পার্টির প্রধান ও বিরোধী দলের নেতা স্যার কেইর স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন প্রয়াত ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে চার দিনের সফরে লন্ডনে রয়েছেন। শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর আবাসস্থলে সাক্ষাৎ করেন স্টারমার।

শেখ হাসিনা মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতির কারণে বাংলাদেশের ওপর ক্রমবর্ধমান বোঝা সম্পর্কে লেবার পার্টির নেতাকে জানান। তাঁরা বাংলাদেশের সীমান্তের কাছাকাছি সশস্ত্র সংঘাতের সাম্প্রতিক বিস্তার নিয়ে আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ তার ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে সংঘাতের প্রভাব ছড়িয়ে পড়া সত্ত্বেও সর্বোচ্চ সংযম অনুশীলন করছে।

ব্রিটেনের বিরোধী দলের নেতা স্যার কেয়ার স্টারমার বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য চমৎকার সম্পর্কে আবদ্ধ এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকদের দ্বারা এ সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং জানায়, শেখ হাসিনা রানির মৃত্যুতে তাঁর গভীর শোক পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

স্যার স্টারমার রানির স্মরণে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তাঁরা ব্রিটেনের লেবার পার্টির সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্যার হ্যারল্ড উইলসনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাক্ষাৎ এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথাও স্মরণ করেন।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দেওয়া বাণীর জন্য প্রধানমন্ত্রী লেবার পার্টির নেতাকে ধন্যবাদ জানান।

স্যার স্টারমার ২০১৬ সালে তাঁর বাংলাদেশ সফর এবং সে সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের কথা স্মরণ করেন। তিনি যুক্তরাজ্যজুড়ে লেবার পার্টি থেকে ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লোক প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, লেবার পার্টি তরুণ প্রজন্মের নেতাদের সহায়তা ও উৎসাহ-উদ্দীপনা দানে কাজ করছে, যা আরও ব্রিটিশ-বাংলাদেশি তরুণদের আকৃষ্ট করবে।

দুই নেতা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথের ওপর আলোচনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষকে খাদ্য, জ্বালানি ও আর্থিক নিরাপত্তাহীনতা থেকে রক্ষা করতে আলোচনার মাধ্যমে সংঘাতের নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জনগণের ওপর ভিন্ন রকম প্রভাব ফেলছে কি না, তা পর্যালোচনার পরামর্শ দেন।

উভয় পক্ষ চলমান মুদ্রাস্ফীতির চাপ এবং জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটের কারণে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কে সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে মতবিনিময় করে।

লেবার পার্টির নেতা বলেন, তাঁরা যুক্তরাজ্য ও পশ্চিমের বড় খুচরা বিক্রেতাদের জন্য তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে ব্যয় ভাগ করে নেওয়ার পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রাখবেন। স্যার স্টারমার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলার প্রশংসা করেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশের সঙ্গে কাজ করার জন্য লেবার পার্টির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে জলবায়ু অংশীদারত্বের প্রসারের প্রশংসা করেন।

পরে মেরিলেবোনের লর্ড স্বরাজ পাল তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের প্রবীণ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের জন্য তাঁর প্রশংসা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক ও শিক্ষা অংশীদারত্ব আরও এগিয়ে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *