মৃত্যু নিয়ে কটূক্তি ও ডিজিটাল আইনে গ্রেফতার

মৃত্যু নিয়ে কটূক্তি ও ডিজিটাল আইনে গ্রেফতার

মৃত্যু নিয়ে কটূক্তি ও ডিজিটাল আইনে গ্রেফতার

আবদুস সালাম : প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিমকে কটূক্তি করার দায়ে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈনকা শিক্ষিকাকে ডিজিটাল আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার গ্রেফতারে আমার কিছু এসে যায় না। ডিজিটাল আইনের প্রতিও আমি যথেষ্ট আশাবাদী। কিন্তু আমার ঘোর আপত্তির জায়গাটি হলো একই আইন সবার উপর কেন সমানভাবে প্রয়োগ হচ্ছে না?

সকাল থেকে দেখছি বেরোবি’র সেই শিক্ষিকার কটুক্তির চাইতেও জঘন্য ভাষায় একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী মোহাম্মদ নাসিমকে যাচ্ছেতাই বলে যাচ্ছে। তার মৃত্যুতে পৈশাচিক উল্লাসে ফেটে পড়ছে। নিউজফিডে গালিগালাজের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে। কই তাদেরকে গ্রেফতারের কোন খবর তো আসলো না? তারা কি সকল আইন ও বিচারের ঊর্ধ্বে?

গতবছর সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুর পর তারা জঘন্য মন্তব্যে মেতেছিলো। সদ্যপ্র‍য়াত জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে নিয়েও তারা অসভ্য কথা বলেছে। কিন্তু সেই কুৎসা রটনাকারী কাউকেই আজ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি বা নূন্যতম বিচারের আওতায় আনা হয়নি।

খ্যাতিমান স্বাধীনতার পক্ষের প্রতিটি শিক্ষাবিদ কিংবা নেতার মৃত্যুতে এরা উল্লাসে ফেটে পড়ে। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধী মানবতা বিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসিতে তারাই আবার মর্মবেদনায় হাহাকার করে উঠে। এই দেশীয় গাদ্দারদের জন্য কি তাহলে সাতখুন মাফ?

মৃত মানুষকে নিয়ে কটুক্তি করা খুবই নোংরা কাজ। আবু জাহলের মৃত্যুর পর কেউ কেউ কটুক্তি করলে রাসূল সা. তাদেরকে ধমক দিয়ে নিবৃত্ত করেছিলেন। তিরমিজির এই ঘটনা ধর্মীয় লেবাসধারী সেই দলটি পড়ে ও পড়ায় কিন্তু চমৎকার এই হাদীসটি থেকে সামান্যতম বোধদয় তাদের নসিব হয় না।

ডিজিটাল আইনে আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে। এই আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে সাইবার ক্রাইম দমন করা সম্ভব। কিন্তু এর একপেশে শৈথিল্যপূর্ণ হেয়ালি প্রয়োগ দেশ ও জাতির জন্য মন্দ ছাড়া ভালো কোন ফলাফল বয়ে আনবে না।

লেখক : মাদরাসা শিক্ষক

মতামত একান্তই লেখকের ব্যক্তিগত, সম্পাদক দায়ী নয়

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *