মৌলিক চাহিদা পাঁচটা না, একটা

মৌলিক চাহিদা পাঁচটা না, একটা

মারুফ মুহাম্মাদ

রাত প্রায় দুটো বাজতে চলেছে। রহমান সাহেবের চোখে একফোঁটা ঘুমও নেই। চারিদিক ভীষণ সুনসান, নিস্তব্ধ। পাশের ঘরে শাহানা কী করছে এখন? ঘুমিয়ে পড়েছে নিশ্চয়ই।

শাহানার সাথে তার এখন হাজার মাইলের দূরত্ব। কোনো কিছুর দরকার হলে তিনি ফোন করেন, ভিডিও কলে কথা বলেন। তার দুই ছেলেমেয়েই থাকে দেশের বাইরে। তার এই অবস্থা সন্তানেরা জানে না। বিছানা থেকে উঠে তিনি বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালেন। তার পৃথিবী বলতে তো এখন এই ঘর আর বারান্দাটাই।

হিম হিম বাতাস বইছে। লকডাউনে রাস্তায় গাড়ি চলাচল নেই বললেই চলে। দূর থেকে হঠাৎ হঠাৎ গাড়ির মৃদু হর্ন ভেসে আসে। রাতের অখণ্ড নীরবতায় তখন ছেদ পড়ে। তিনি অ্যাম্বুলেন্সের একটা মৃদু সাইরেন শুনতে পেলেন। শব্দটা কিছুক্ষণ পরই মিলিয়ে গেল। ঢাকা শহরের রাস্তাঘাট ফাঁকা। যানজটের কোনো ভয় নেই। অ্যাম্বুলেন্স জ্যামে পড়বে না। কিন্তু ভেতরে যে মানুষটা শুয়ে আছে, তাকে বাঁচানো যাবে কি?

এসব ভেবে রহমান সাহেব দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। তার এখন সন্তানদের দেখতে খুব ইচ্ছা করছে। তিনি আকাশের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বললেন, মানুষের মৌলিক চাহিদা পাঁচটা না, একটা। সেটা হল বেঁচে থাকা। বেঁচে থাকলেই কেবল বাকি পাঁচটার মূল্য থাকে। একজন মৃত মানুষের কি খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার কোনো প্রয়োজন হয়?

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *