পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: বিএনপি-জামায়াতের দ্বিতীয় দফায় টানা ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ শেষ হলেও যাত্রী সংকটে ভুগছে দূরপাল্লার পরিবহন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে দূরপাল্লার বিভিন্ন বাস রাজধানী ছাড়লেও যাত্রী তেমন ছিল না। সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
কথা হয় পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। তারা বলেন, রোববার ও সোমবার দুই দিন অবরোধ ছিল। আজকে অবরোধ নেই কিন্তু তারপরও যাত্রী নেই। কারণ একদিন বাদেই আবার দুই দিনের অবরোধ। যাদের খুব জরুরি কাজ রয়েছে শুধুমাত্র তারাই ঢাকা ছাড়ছেন কিংবা ঢাকায় প্রবেশ করছেন। জনজীবন স্বাভাবিক না হলে যাত্রী সংকট থাকবে।
যাত্রীরা বলছেন, অবরোধ কর্মসূচি ঘিরে গাড়ি ভাংচুর হয়, আগুন দেওয়া হয়। আর এটা শুরু হয় কর্মসূচি পালনের আগের দিন থেকে। বুধবার ও বৃহস্পতিবার যেহেতু অবরোধ তাই ভয়ে, আতঙ্কে মানুষ দূরের গন্তব্যে যাচ্ছেন না।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোণা, বরিশাল, খুলনা,পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ দেশের অন্যান্য গন্তব্যের বাসগুলো সময়মতো টার্মিনাল ছেড়ে যাচ্ছে। তবে যাত্রী খুব একটা নেই। যাত্রীদের মধ্যেও উৎকণ্ঠা দেখা গেছে।
ময়মনসিংহ-ঢাকা রুটের এনা পরিবহনের যাত্রী মোতালেব খন্দকার বলেন, খুব জরুরি কাজ ছিল কিন্তু অবরোধের কারণে যেতে পারিনি। আজ গাড়ি ছাড়লো কিন্তু কাল থেকেতো আবার অবরোধ। সেজন্য ভয় কাজ করছে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটের সৌখিন এক্সপ্রেসের চালক মুরাদ বলেন, ময়মনসিংহ থেকে সকালে একবার এসেছি। কিন্তু যাত্রী নেই। আসার পথে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা আয় হয়েছে। এরমধ্যে তেল খরচই আছে চার হাজার টাকা।
কাউন্টারের টিকেট বিক্রেতা সুমন বলেন, কাল তো আবার অবরোধ আমরা গাড়ি ছাড়লেও যাত্রী তেমন আসছে না।
ঢাকা-জামালপুর রুটে রাজীব এন্টারপ্রাইজের চালক নিজাম বলেন, দুইদিন তো বাস চালাতে পারিনি। তাই আজকে বাস নিয়ে বের হয়েছি। মালিক অবরোধের সময় বাস চালাতে নিষেধ করেন। বাসের ঝুঁকি তো থাকেই, সঙ্গে জীবনের ঝুঁকিও।
জৈনপুর এক্সপ্রেসের চালক মনির হাসান বলেন, অবরোধে গাড়ি ভাংচুর হয়, আগুন দেয় তাই ভয়ে যাত্রীরা গাড়িতে উঠতে চায় না। আমরাও গাড়ি নিয়ে বের হই না। দুই দিনের অবরোধ শেষ হওয়ার পর আজকে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু যাত্রী তেমন নেই।
নারায়ণগঞ্জ রুটের বন্ধন পরিবহনের কাউন্টারম্যান শেখ শামিম বলেন, স্বাভাবিক দিনগুলোতে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন থাকে। কিন্তু আজ দেখেন খালি গাড়ি লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অবরোধ শেষ হয়ে গেছে কিন্তু তবুও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে।
উল্লেখ্য, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে দুই দফায় পাঁচ দিনের অবরোধ শেষে আবারও সারা দেশে দুই দিনের সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত। আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবার এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে দল দুটি।