যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমেছে ২৫.০৭%

যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমেছে ২৫.০৭%

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: দেশের পোশাক খাতের বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্রে ২০২২ সালের চেয়ে ২০২৩ সালে রপ্তানি কমেছে ২৫.০৭%।

কমার্স ডিপার্টমেন্টের টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল অফিসের (ওটেক্সা) সাম্প্রতিক তথ্যে এ কথা জানা যায়।

ওটেক্সার তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৭.২৯ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। আর ২০২২ সালে রপ্তানি করেছিল ৯.৭২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক পণ্য।

উত্তর আমেরিকার দেশটির পোশাক বাজারে বাংলাদেশ তৃতীয় সর্বোচ্চ ৯.৩৭% পোশাক রপ্তানি করে থাকে।

চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পরিণতি হিসাবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় সব প্রধান পোশাক সরবরাহকারীর রপ্তানিই কমেছে।

ওটেক্সার তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বস্ত্র ও পোশাক পণ্যের সামগ্রিক আমদানি ২২.০৪% কমে দাঁড়িয়েছে ৭৭.৮৪ বিলিয়ন ডলারে। যা ২০২২ সালে ছিল ৯৯.৮৫ বিলিয়ন ডলার।

২০২৩ সালের মাস অনুযায়ী বাংলাদেশের যত আয়: জানুয়ারিতে ৮৬৬.০৮ মিলিয়ন ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ৬০২.৭১ মিলিয়ন ডলার, মার্চে ৬৬৫.২০ মিলিয়ন ডলার, এপ্রিলে ৫৬২.১২ মিলিয়ন ডলার, মে মাসে ৬১৪.৬৯ মিলিয়ন ডলার, জুনে ৫১২.৬১ মিলিয়ন ডলার, জুলাইয়ে ৭৪৫.৮০ মিলিয়ন ডলার, আগস্টে ৬১৫.৮৯ মিলিয়ন ডলার, সেপ্টেম্বরে ৬১৫.৮৯ মিলিয়ন ডলার, অক্টোবরে ৫৭৮.৪৮ মিলিয়ন ডলার, নভেম্বরে ৪৩৩.৫৬ মিলিয়ন ডলার ও ডিসেম্বরে ৪৯৮.৩১ মিলিয়ন ডলার আয় এসেছে।

ওটেক্সার তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ২০২২ সালের ৩.১৩ বিলিয়ন ডলার থেকে ২৭.৯৪% কমে ২.২৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

২০২৩ সালে মার্কিন বাজারে যথাক্রমে প্রথম এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থান দখল করেছে চীন ও ভিয়েতনাম।

যুক্তরাষ্ট্রে চীনের পোশাক রপ্তানি বাজার ২০.৯৬%। ২০২২ সাল্র তারা ২১.৭৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল। তবে ২০২৩ সালে তা ২৪.৯৮% কমে ১৬.৩১ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।

২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ১৪.১৭ বিলিয়ন ডলারের পোশাক পণ্য রপ্তানি করেছে ভিয়েতনাম। মার্কিন বাজারে ১৮.২১% শেয়ার থাকা দেশটি আগের বছরের ১৮.২৪ বিলিয়ন ডলার থেকে ২২.২৯% কম রপ্তানি করতে পেরেছে এ বছর।

বাংলাদেশের পরেই ৫.৭৪% বাজার নিয়ে রপ্তানির চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ভারত। তারা ২০২৩ সালে ৪.৪৭ বিলিয়ন ডলার পোশাক পণ্য রপ্তানি করেছে। যা ২০২২ সালের ৫.৬৯ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ২১.৪২% কম।

এছাড়াও ইন্দোনেশিয়ার আয় ২৫.১৯% কমে হয়েছে ৪.১৯ বিলিয়ন ডলার, কম্বোডিয়ার ২৩.৫৮% কমে ৩.৩২ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে।

পঞ্চমে থাকা ইন্দোনেশিয়ার বাজারে ৫.৩৮% হিস্যা আর ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা কম্বোডিয়ার বাজারে দখল ৪.২৭%।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে প্রতিটি দেশ উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ভুগছে। এজন্য আমদানি কমিয়ে দেওয়ায় ২০২৩ সালে বৈশ্বিক পোশাক শিল্প অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত ছিল।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রধান পোশাক আমদানিকারক দেশ যুক্তরাষ্ট্র ২০২৩ সালে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে এর ব্যবহার কমিয়েছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘২০২৩ সালে মার্কিন বাজারে পোশাক রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি পাওয়া একমাত্র দেশ বাংলাদেশ নয়; অন্যান্য রপ্তানিকারক দেশের অবস্থাও একই।’’

তবে, তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ‘‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাজারের উন্নতি হবে। মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি ও সুদের হার স্থিতিশীল থাকবে, যা আগামী মাসগুলোতে বাজার পুনরুদ্ধারে সহায়তা করতে পারে।’’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *