যুদ্ধবিরতির আশা জাগছে গাজায়

যুদ্ধবিরতির আশা জাগছে গাজায়

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: বেশ কয়েক দিনের অচলাবস্থার পর গাজায় নতুন যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে মিসরে গেছেন হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া। এদিকে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ বলেছেন, তাঁরা আরেকটি ‘মানবিক যুদ্ধবিরতি’ দিতে প্রস্তুত আছেন। হামাস ও ইসরায়েলের এমন মনোভাব গাজায় আরেকটি যুদ্ধবিরতির আশা জাগাচ্ছে। এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহবান জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গতকাল আবার ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে।

আগের ভোটগুলো মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোতে নাকচ হয়ে যায়। প্রতিবেশী মিসরের গোয়েন্দা প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গতকাল কায়রো পৌঁছান হামাস নেতা হানিয়া। তিনি সাধারণত কাতারে অবস্থান করে সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘গাজা উপত্যকায় আগ্রাসন ও অন্যান্য বিষয়ে’ আলাপ-আলোচনা করতে ইসমাইল হানিয়া কায়রো গেছেন।

হানিয়ার মিসর সফরে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির আলোচনা নিয়ে নতুন করে তৎপরতারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। প্রসঙ্গত, গত মাসে সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে হামাস ও ইসরায়েলকে সম্মত করতে কাতারের পাশাপাশি মিসরও মধ্যস্থতায় সহযোগিতা করেছিল। ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ গত মঙ্গলবার বলেছেন, জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে তাঁরা সংঘাতে বিরতি দিতে প্রস্তুত আছেন। বেসামরিক প্রাণহানি বন্ধে ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্ররা যুদ্ধবিরতির জন্য ক্রমবর্ধমানভাবে চাপ দিচ্ছে।

অন্যদিকে হামাসের হাত থেকে জিম্মিদের উদ্ধারে তাদের পরিবারগুলোও নেতানিয়াহু সরকারের ওপর চাপ দিচ্ছে। হামাসের হাতে এখনো প্রায় ১২৯ জন জিম্মি আছে বলে ধারণা। গত মঙ্গলবার জিম্মিদের পরিবারগুলোকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানান, জিম্মিদের মুক্ত করার চেষ্টা চালাতে তিনি ইসরায়েলি গোয়েন্দা প্রধানকে দুই দফা ইউরোপ পাঠিয়েছেন।

নিরাপত্তা পরিষদে ভোট

একাধিকবার বিলম্বিত হওয়ার পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গতকাল গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হওয়ার কথা। তিনটি কূটনৈতিক সূত্র একথা জানায়।

প্রস্তাবের শব্দচয়ন ঘিরে সদস্যদের মধ্যে বাদানুবাদের জেরে দুই দফা ভোটাভুটি পিছিয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, প্রস্তাবটির সর্বশেষ সংস্করণে বৈরিতা ‘স্থগিত’ রাখার কথা বলা হয়েছে। এর আগে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে মানবিক সহায়তা সংগঠনগুলোর নিন্দার মুখে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র।
জাবালিয়ার হাসপাতালে ৪৬ লাশ

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল জানায়, গত মঙ্গলবারও জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েল ব্যাপক হামলা চালায়। বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে রয়েছে। জাবালিয়া মেডিক্যাল সেন্টারে অন্তত ৪৬টি লাশ রাখা হয়েছে।

খান ইউনিসের সড়কে লড়াই

দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরের সড়কে গতকাল তুমুল লড়াই হয়েছে। গতকাল সকালে হামাসের সঙ্গে যুক্ত সংবাদ সংস্থা সাফা জানায়, শহরের কেন্দ্রস্থলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) মুখপাত্র ডানিয়েল হাগরি জানান, খান ইউনিসে তাঁদের সামরিক তৎপরতা আরো সম্প্রসারিত করা হয়েছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। এতে এক হাজার ২০০ জন নিহত হন। এ ছাড়া প্রায় ২৫০ জন হামাসের হাতে জিম্মি হয়। হামাসের আক্রমণের পর গাজায় ইসরায়েলের টানা প্রতিশোধমূলক হামলায় এ পর্যন্ত বিপুলসংখ্যক শিশুসহ প্রায় ২০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।

সূত্র: বিবিসি, এএফপি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *