পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : পাকিস্তানের চিত্রল থেকে ইসলামাবাদে যাওয়ার পথে বিশ্ব নন্দিত সঙ্গীতশিল্পী ও দাঈ জুনায়েদ জামশেদের বিমান দুর্ঘটনার কারণ জানা গেছে।
সম্প্রতি পাকিস্তান আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা (পিআইএ) ওই দুর্ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। বিমানের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনটি পাকিস্তান সরকারের কাছে জমা দিয়েছে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিআইএ এটিআর বিমানটি ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে চিত্রল থেকে ইসলামাবাদের উদ্দেশে উড়েছিল। হঠাৎ ইঞ্জিনের পাওয়ার টারবাইনের স্টেজ ওয়ান ব্লেড (পিটিআই) ভেঙে নির্ধারিত জায়গা থেকে সরে যায়। ফলে পাওয়ার টারবাইন খাদটি ঘুরে ওএসজি পিনটিও নষ্ট করে দেয়।
তদন্ত দলটি সন্দেহ করছে, দুর্ঘটনার আগে চিত্রলা থেকে ইসলামাবাদ যাওয়ার পথে বিদ্যুৎ টারবাইন স্টেজ ওয়ান ব্লেড এবং ওএসজি পিনটি ভেঙে গিয়েছিল ঠিক, তা সত্ত্বেও বিমানটি পরবর্তী ফ্লাইটের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ওএসজি পিনের ধাতব বিশ্লেষণে প্রকাশিত হয়েছে যে, এটি রক্ষণাবেক্ষণের সময়ই মূলত ভুলভাবে লাগানো হয়েছিল।
বিমানটির শেষ কাজ করা হয়েছিল কানাডায়। যেখানে কেবল ওএসজিই সংশোধন করা হয়নি পার্টের নম্বরটিও পরিবর্তন করা হয়েছিল।
ওই দিন ফ্লাইট চলাকালীন বিকাল ৪.৫৫ মি. ৩১ সেকেন্ডে এই ত্রুটিটি শুরু হয়। ইঞ্জিনের জ্বালানি দূষণের কারণে ত্রুটিটি আরও প্রকটভাবে দেখা দেয়।
যা ভাঙা ওএসজি পিন এবং পাওয়ার টারবাইন স্টেজের সঙ্গে মিলিত একটি ফলক প্রপেলারের গতি কমিয়ে দেয় এবং প্রোপেলারটি বৈদ্যুতিক নিয়ন্ত্রণের কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
৪:১০ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডে এক নম্বর ইঞ্জিন নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় এবং ৪:১১ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডে ওএসজিও অকেজো হয়ে পড়ে।
মূলত হতাহত বিমানটির পাইলটরা একেবারে নতুন ধরনের একটি ত্রুটি দেখতে পান। যা এটিআর বিমানগুলোতে এর আগে কখনও তারা দেখেননি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইঞ্জিন ডিজাইনের পরিবর্তনটি নির্মাতার ত্রুটি ছিল। যিনি এটি ঠিক করার জন্য আরও ভালো ডিজাইনের প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু পিআইএ সময় মতো বিমানের মেরামতের কাজ শেষ করতে পারেনি। এ ছাড়া প্রক্রিয়াটিও সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ৭ ডিসেম্বর ২০১৬ সালে পাকিস্তানের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী জুনায়েদ জামশেদ চিত্রল থেকে ইসলামাবাদে যাওয়ার পথে বিমান দুর্ঘটনার শিকার হন এবং তিনি ও তার পরিবারসহ মোট ৪৭ জন যাত্রী ওই দুর্ঘটনায় মারা যান।
সূত্র : যুগান্তর
/এএ