পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : সরকারের ব্যর্থতার কারণে রমজানেও দেশের মানুষ স্বস্তিতে দিন কাটাতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার প্রথম রমজানে এতিম ও উলামা-মাশায়েখদের সম্মানে এক ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে মাহে রমজানের মধ্যেও আমরা শান্তিতে স্বস্তিতে দিন কাটাতে পারছি না। আমাদের প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। এলপিজি গ্যাসের দামও টানা বাড়িয়ে চলেছে। তারা বাজার ও অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণভাবে হত্যা করে আজকে দেশে একটা ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি করেছে সরকার।
ফেব্রুয়ারি, মার্চে এলপিজি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির পর এপ্রিল মাসেও দাম বৃদ্ধির নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিশ্ব বাজারে দাম বৃদ্ধির কথা বলে সরকার টানা তিন মাস এলপিজির দাম বাড়াল।
রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থার ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে (রোববার) এখানে অনেক মেহমান আসতে পারেননি, আলেম-উলামা, মাদ্রাসার ছেলে-মেয়েরা আসতে পারেননি। কারণটা কী? ট্রাফিক জ্যাম। এত ভয়াবহ ট্রাফিক জ্যাম যে, কেউ এসে পৌঁছাতে পারেননি।
ইস্কাটন গার্ডেনের লেডিস ক্লাবে বিএনপি ‘এতিম ও উলামা-মাশায়েখদের সম্মানে এই ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ইফতারের ঠিক ১৫ মিনিট আগে অর্ধেক অতিথি অনুষ্ঠানে এসে পৌঁছতে পেরেছেন। বিএনপি মহাসচিব প্রচণ্ড ট্রাফিক জ্যামে আটকে থেকে পরে পথ থেকে মোটরসাইকেলে অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছান।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসও ইফতার শুরুর সময়েই অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছান। তিনি বলেন, প্রচণ্ড ট্রাফিক জ্যামে নিজের গাড়ি রাস্তায় রেখে পায়ে হেটে আসতে হয়েছে। তেজগাঁও মহিলা এতিম খানা, শান্তিনগর এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদ্রাসা এবং ফার্মগেইট মাদ্রাসা এতিম শিক্ষার্থীদের এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়। মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ইফতার শুরুর প্রায় ৫ মিনিট পর অনুষ্ঠান স্থলে এসে পৌঁছায়।
উলামা-মাশায়েখদের মধ্যে বাড্ডা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোশাররফ হোসেন, স্পিচ অব ইসলামের প্রেসিডেন্ট মাওলানা রেজাওয়ানুর রহমান খাঁন, মোহাম্মদপুর রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ জামে মসজিদের ইমাম মুফতি মহিউদ্দিন আহমেদ, মোহাম্মদপুর বায়তুল ফজল সিনিয়র মাদ্রাসার প্রধান মাওলানা গোলাম মাওলা মূল মঞ্চে ছিলেন।
ইফতারে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুল কাইয়ুম, ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক ও সদস্য সচিব মাওলানা নজরুল ইসলাম তালুকদার উপস্থিত ছিলেন। ইফতার শুরুর আগে বিভিন্ন টেবিল ঘুরে আগতদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বিএনপি মহাসচিব।
করোনার কারণে দুই বছর কোনো ইফতার অনুষ্ঠান করতে পারেনি তারা। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রথম রোজার ইফতার এতিমদের সঙ্গে করতেন।
ইফতারের সময়ে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিবছর আমরা ১৬ কোটি মানুষের প্রিয় মানুষ দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে ইফতার করেছি। দুর্ভাগ্য আমাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তিনি আজকে অসুস্থ অবস্থায় গৃহবন্দি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের কাছে থেকে ৮ হাজার মাইল দূরে নির্বাসিত অবস্থায় রয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা এই মাহে রমজানে আশা করেছিলাম, সব জিনিসপত্রের দাম কমবে। না কমলে অন্তত বাড়বে না। দুর্ভাগ্যের কথা যে, প্রত্যেকটি জিনিসের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। যেটা নিয়ে আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে, আমরা দলের পক্ষ থেকে জনগণের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করেছি, বিক্ষোভ করেছি।