রাজনীতিতে আগুন সন্ত্রাস ঠেকাতে হবে

রাজনীতিতে আগুন সন্ত্রাস ঠেকাতে হবে

রাজনীতিতে আগুন সন্ত্রাস ঠেকাতে হবে

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : পথে পথে বাসে বাসে আগুন দেয়ার মতো মর্মস্পর্ষী ঘটনা, বেদনাদায়ক চিত্র আর কী হতে পারে? আগুন সন্ত্রাস কোনোভাবেই কাম্য নয়। একে যেকোনো মূল্যে রুখতে হবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি। বৃহস্পতিবার ১১টি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা এমনই প্রশ্ন করছিলেন।

২০১৩-১৪ সালে বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধকে কেন্দ্র করে এমনই আগুন সন্ত্রাস দেখেছিল দেশের মানুষ। সে সময় কয়েক শ মানুষ আগুনে পুড়ে হতাহত হয়েছিল। একপর্যায়ে মানুষ ঘর থেকে বেরোতেও ভয় পেত। কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর আবারও এমন আগুন সন্ত্রাস দেখে স্বাভাবিকভাবেই মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনের দিন এমন সন্ত্রাসকে পূর্বপরিকল্পিত বলেই মনে করছে পুলিশ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে, প্রত্যক্ষদর্শী এবং বিভিন্ন স্থানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। কয়েকজনকে শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য মতে, আগুন সন্ত্রাসের প্রথম ঘটনাটি ঘটে দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে পল্টনে বিএনপি অফিসের উত্তর পাশে। এখানে কর অঞ্চল-১৫-এর পার্ক করা সরকারি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

এরপর দুপুর ১টার দিকে মতিঝিলের মধুমিতা সিনেমা হলের সামনে, ১টা ২৫ মিনিটে গুলিস্তানে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে রমনা হোটেলের সামনে, দেড়টায় শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে, ২টা ১০ মিনিটে সচিবালয়ের উত্তর পাশে এবং ২টা ২৫ মিনিটে বংশাল থানার নয়াবাজার এলাকায় বাসে আগুন লাগানো হয়। বাকি বাসগুলোতেও বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে অগ্নিসংযোগ করা হয়। উপনির্বাচনের ফলাফল পাওয়া গেছে রাতে। ফলে এটা স্পষ্ট যে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার কারণে হঠাৎ উত্তেজিত কোনো পক্ষ এ ঘটনা ঘটায়নি। বরং বলা যায় যে আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল, নির্বাচনের দিন এ ধরনের কিছু ঘটনা ঘটানো হবে। বাসগুলোতে গানপাউডার বা অন্য কোনো বিস্ফোরক পদার্থ দিয়ে আগুন লাগানো হয়েছে এবং সন্ত্রাসীরা সেগুলো আগে থেকেই সংগ্রহ করে রেখেছিল। শুধু বাসে অগ্নিসংযোগ নয়, নির্বাচনকেন্দ্রসহ কয়েকটি স্থানে হাতবোমারও বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।

আগুন সন্ত্রাসের ঘটনাগুলোর পর ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দল যথারীতি পরস্পরকে দোষারোপ করেছে এবং হয়তো আরো করবে। সেই দোষারোপের রাজনীতিতে না গিয়েও আমরা বলতে পারি, ঘটনাগুলো অত্যন্ত জঘন্য ও নিন্দনীয়। কোনোভাবেই একে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। আগুন সন্ত্রাসের এই পুনরাবির্ভাবকে অঙ্কুরেই বিনাশ করতে হবে। তা না হলে একসময় এটিই দাবানল হয়ে উঠতে পারে। এসব ঘটনায় পুলিশ ও গোয়েন্দাদের ব্যর্থতাই আমাদের চোখে পড়ে।

সন্ত্রাসীরা এমন ঘটনা ঘটাতে পারে, তা সম্ভবত পুলিশ ও গোয়েন্দারা আগে থেকে কিছুই জানতে পারেনি। তারা যাতে ২০১৩-১৪ সালের মতো তা-ব চালাতে না পারে সে জন্য গোয়েন্দাদের আরো তৎপর হতে হবে। আমরা চাই, যেকোনো মূল্যে জনজীবনের স্বাভাবিকতা রক্ষা করা হোক। আগুন সন্ত্রাসে আর একটি প্রাণও ঝরে না যাক।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *