রাসূল সা. কে নবী হিসেবে মানা যেমন আবশ্যক তেমনি তাঁকে শেষ নবী মানাও আবশ্যক- মুফতি আফফান মানসুরপুরী  

রাসূল সা. কে নবী হিসেবে মানা যেমন আবশ্যক তেমনি তাঁকে শেষ নবী মানাও আবশ্যক- মুফতি আফফান মানসুরপুরী  

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: সোমবার লন্ডনের মারকাযে ইশা’আতে ইসলাম কনফারেন্স হলে ‘খতমে নবুওয়াত ও আমাদের দায়িত্ব’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এই মন্তব্য করেন আওলাদে রাসূল মুফতি আফফান  মানসুরপুরী। তিনি বলেন, ‘উম্মতকে সঠিকভাবে নবীজী -সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ও তাঁর নবুওয়াতের ব্যাপারে জানানোর সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব আমাদের সমাজের ওলামায়ে কেরাম এবং ইমামদের। কারণ, তাদের মাধ্যমেই এই শরিয়তের সিলসিলা উম্মতের কাছে এসেছে, আর তাদের মাধ্যমেই এই কাজের ধারাবাহিকতা বহাল থাকবে ইনশাআল্লাহ’।

খতমে নবুওয়াতের আক্বীদা প্রচার প্রসারের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে এই নবী দৌহিত্র বলেন, ‘এই কাজ সাধারণ মানুষের মাঝে প্রবলভাবে করা উচিত। হুজুর -সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর  উপর একজন মুসলমানের ইমান থাকা যেমন আবশ্যক ঠিক তেমনিভাবে তাঁর খতমে  রেসালাতকেও মানা আবশ্যক। মানুষকে একথা জানানো যে, খতমে নবুওয়ত ইসলামের মৌলিক আক্বীদা ও বিশ্বাসের অন্তর্ভুক্ত। এবং রাসূল – সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর উপর একজন মুমিনের ইমান ও ভালোবাসা পূর্ণ হবে না যদি সে তাঁর খতমে রেসালাতের উপর বিশ্বাস না রাখে। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যেমন নবী ও রাসূল মানা আবশ্যক তেমনি তাঁকে শেষ নবী মানাও আবশ্যক। আর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা যেখানে কোরআনে রাসূল সা.-কে খাতামুন নাবিয়্যীন বা শেষনবী হিসেবে ঘোষণা করে দিয়েছেন সেখানে আর কোন পথ থাকে না  বিতাড়িত শয়তানের পথ ছাড়া। আল্লাহ তা’ আলা আমাদেরকে এই বিষয়টা বোধগম্য করে দিন’।

এই প্রেক্ষিতে হযরত আনোয়ার শাহ কাশ্মীরির একটি ঘটনা উল্লেখ করে ক্বারী উসমান  মানসুরপুরীর এই সুযোগ্য তনয় বলেন-

‘হযরত  আনোয়ার শাহ কাশ্মীরি রহ. তাঁর বার্ধক্যের দিনগুলিতে কঠিন অসুস্থতায় কাটাচ্ছিলেন। একদিন জুমার খুতবার সময় সময় তার কাছে সংবাদ পৌঁছালো, ভাওয়ালপুরে খতমে নবুওয়তের ব্যাপারে কোর্টে তাকে স্বাক্ষী হিসেবে উপস্থিত হতে হবে। একদিকে তাঁর তীব্র অসুস্থতা আর অন্যদিকে খতমে নবুওয়তের ব্যাপারে কোর্টে স্বাক্ষী হিসেবে উপস্থিত হওয়া। তিনি বললেন, আমার  অসুস্থতার চেয়ে কোর্টে উপস্থিত হওয়াই আমার জন্য বেশি জরুরী। জীবনে তেমন কোনো আমলের মাধ্যমে আখেরাতের পথ সুগম করতে পারিনি, কমপক্ষে এই কাজ করলে হয়ত আখেরাতের সেই দুর্গম পথ কিছুটা সুগম হবে ইনশা আল্লাহ।

একথা শুনে মুফতি আব্দুল হান্নান হাযারভী বললেন, হযরত আপনি যদি এমন কথা বলেন, মাগফিরাত ওসিলা খুঁজেন তাহলে আমাদের কী হবে! আমরা তো আপনাকে আমাদের সেরেতাজ হিসেবে মানি। তখন কাশ্মীরি রহ. বলেন, সেটা তোমার বদান্যতা। সত্য হলো যদি আমি খতমে  নবুওয়তকে রক্ষা করতে না পারি তাহলে আমার চেয়ে রাস্তার কুকুরেরাও বেশি কামিয়াব৷

ঘটনাটি উল্লেখ করে মুফতি মানসুরপুরী বলেন, ‘এ ঘটনা ইতিহাসের অংশ। আমাদের আকাবিরগণ  যেভাবে এই মহান কাজকে আঞ্জাম দিয়েছেন আল্লাহ পাক আমাদেরকেও সেভাবে কাজ করার তৌফিক দান করুন। এই আক্বীদা রক্ষার আন্দোলনে বরকত দান করুন। আমীন।

 

উর্দু থেকে অনুবাদ- তামীম আব্দুল্লাহ 
সম্পাদনা- আব্দুস সালাম ইবন হাশিম

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *