রুমাল যেভাবে হয়ে উঠল ফিলিস্তিনের প্রতি বিশ্ব সংহতির প্রতীক

রুমাল যেভাবে হয়ে উঠল ফিলিস্তিনের প্রতি বিশ্ব সংহতির প্রতীক

হামাস–ইসরাইলের যুদ্ধের কারণে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানাতে ক্রমেই বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সাদা–কালো কেফিয়াহ। বিশ্বজুড়ে সংহতির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে এই স্কার্ফ।

তবে যারা সাদা–কালো এ স্কার্ফটি পরছেন তারা নানাক্ষেত্রে বিপদের সম্মুখীনও হচ্ছেন। পশ্চিমে অনেকে চাকরি হারানোর কথাও শেয়ার করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।

ইসরাইল সমর্থকেরা সাদা–কালো চেকের এ স্কার্ফকে দেখছেন উসকানি ও সন্ত্রাসবাদের সমর্থন হিসেবে।

ফিলিস্তিনের সমর্থন ও গাজায় যুদ্ধ বিরতির আহ্বানে ব্রিটেন ও অন্যান্য জায়গায় আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে হাজার হাজার মানুষ এ স্কার্ফ পরছেন।

তবে বিক্ষোভকারীরা বলছেন, ফ্রান্স ও জার্মানিতে এ স্কার্ফ পরা নিয়ে ফিলিস্তিনপন্থীদের সতর্ক, জরিমানা ও আটকসহ নানাভাবে হয়রানি করছে পুলিশ।

ফিলিস্তিনি–সিরীয় কবি, বর্তমানে জার্মানির বার্লিনের বাসিন্দা রামি আল আশেকের বিশ্বাস, তিনি এ সমস্যার সমাধান খুঁজে পেয়েছেন। তিনি তার হাতের কনুই থেকে কবজি পর্যন্ত কেফিয়াহ ধাঁচে উল্কি আঁকিয়েছেন।

রামি বলেন, ‘কেফিয়াহ পরাকে অপরাধ হিসেবে দেখা হচ্ছিল এবং মানুষকে খুলে ফেলতে বলা হচ্ছিল। আমিও বললাম, ঠিক আছে, আপনি আমার কেফিয়াহ খুলে ফেলতে পারেন, তবে এর জন্য আপনাকে আমার হাত কাটতে হবে!

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, আমি আমার ক্ষোভ আর আমার অপরাধ সাব্যস্ত করা সংস্কৃতিকে উদযাপন করছি। এটা দেখতে সুন্দর এবং এটা এতগুলো মানুষের মৃত্যুর কথা মনে করাবে।

তবে জার্মানির স্যুডয়চে জাইটং সংবাদপত্র কেফিয়াহকে একটি ‘সমস্যাযুক্ত কাপড়’ বলে অভিহিত করেছে এবং জার্মান ফিলিস্তিনপন্থীদের এর পরিবর্তে নাৎসি পোশাক পরতে পরামর্শ দিয়েছে। অর্থাৎ এই পত্রিকার সম্পাদকেরা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার প্রতীক কেফিয়াহর চেয়ে নাৎসি প্রতীককে শ্রেয়তর মনে করছে!

ইসরাইল সমর্থকেরা বলেন, এই রুমাল পরা মানে গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় নিহত ১ হাজার ২০০ ইসরাইলির প্রতি অসম্মান করা। এখন ইসরাইল গাজায় ওই হামলার জবাবই দিচ্ছে।

ফিলিস্তিনের সমর্থকেরা বলছেন, ইসরাইলি হামলায় ফিলিস্তিনে ১৮ হাজার ৮০০–এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং ইসরাইল এখনো ফিলিস্তিনি ভূমি দখল করে চলেছে।
উত্তপ্ত এ পরিস্থিতিতে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ভারমন্টে কেফিয়াহ পরায় তিন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত কলেজ শিক্ষার্থীকে গুলি করা হয়।

দীর্ঘসময় ধরেই ফিলিস্তিনি জাতীয়তাবাদের প্রতীক হয়ে রয়েছে এই কেফিয়াহ। ফিলিস্তিন লিবারেশন অরগানাইজেশনের (পিএলও) প্রয়াত নেতা ইয়াসির আরাফাতের পরনে থাকত এই রুমাল।

কোনো ছবিতেই তাকে এ রুমাল ছাড়া দেখা যায়নি। তিনি এমনভাবে রুমালটি ভাঁজ করতেন, যা দেখে মনে হতো ঐতিহাসিক ফিলিস্তিনের মানচিত্র।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *