পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে ঝুঁকি বিবেচনায় বিভিন্ন এলাকাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করে সরকার যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তা ‘কঠোরভাবে পালনের’ আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সোমবার (২২ জুন) সংসদ ভবন এলাকায় নিজের বাসা থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নোয়াখালীতে কোভিড-১৯ হাসপাতালের জন্য চিকিৎসা সারঞ্জাম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “সরকার নতুন করে করোনার উচ্চ ঝুঁকি বিবেচনায় বেশ কিছু জেলা ও সিটি করপোরেশনের সুনির্দিষ্ট এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। এসকল এলাকার জনসাধারণকে কঠোরভাবে সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালনের আহ্বান জানাচ্ছি। অনুরোধ করছি ধৈর্য্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার।”
নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সরকার করোনাভাইরাস পরীক্ষা ও চিকিৎসার সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে ৬০টির বেশি কেন্দ্রে টেস্ট করা হচ্ছে। যদিও আমাদের টেস্ট সেন্টার আরও বাড়ানো প্রয়োজন।”
এরইমধ্যে চিকিৎসা সরঞ্জাম, সুরক্ষা সামগ্রীসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, “যত প্রস্তুতিই নেওয়া হোক না কেন, বিশ্বব্যাপী একটি অভিন্ন কথাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেটি হলো নিজের সুরক্ষা।
“করোনা প্রতিরোধের সবচেয়ে সেরা কৌশল হিসেবে নিজেকে সচেতন থাকতে হবে। সুরক্ষা দিতে হবে। তাই আসুন কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে আমরা সুরক্ষার প্রাচীর গড়ে তুলি, নির্মাণ করি সচেতনতার দুর্গ।”
বাংলাদেশ সফররত চীনা বিশেষজ্ঞ দল নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সরকারের চিকিৎসার উদ্যোগ এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের দায়িত্ব পালনের ‘প্রশংসা করেছেন’ বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “পরীক্ষা কম হচ্ছে বলে তারা মত প্রকাশ করার পাশাপাশি জনগণের সচেতনতার অভাবের কথাও বলেছেন। আমি আবারো সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি। মনে রাখবেন, এক সেকেন্ডের অবহেলা, হাত ধোয়ায় ২০ সেকেন্ডের অলসতা ভয়ানক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।”
কোভিড-১৯ এর উপসর্গ দেখা দিলে তা গোপন না করে পরীক্ষা করার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “লক্ষণ গোপন করে অনেকর স্বাভাবিক চলাফেরা করার কারণে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। দয়া করে সবার স্বার্থে এ ঝুঁকি নেবেন না।”
সরকার সারাদেশে, বিশেষ করে জেলা পর্যায়ে হাসপাতালে আইসিইউসহ জরুরি সেবা সম্প্রসারণ এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এর পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগ নেওয়া হলে তা সঙ্কটের মধ্যে প্রস্তুতিকে বেগবান করবে।
“তারা যেভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, সেভাবে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে পারেন।”
অনেকে ‘ফেইসবুকে পাওয়া প্রেসক্রিপশন’ অনুসরণ করতে গিয়ে ‘ভয়ঙ্কর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে’ পড়ছেন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “প্রয়োজনে হটলাইনে যোগাযোগ করুন। টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করুন। অযথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিকিৎসা করবেন না। আপনার সমস্যা অন্যের সাথে নাও মিলতে পারে। এতে আপনি ঝুঁকিতে পড়বেন।”
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাদের ত্রাণ কাজে বাধার যে অভিযোগ করেছেন, তার জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, কোথায় কে বাধা দিয়েছে আপনারা স্পষ্ট করুন। তথ্য-প্রমাণ দিন। অভিযোগ সত্য হলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। এছাড়া আমরা নিজেরাও খোঁজখবর নিচ্ছি। মানবিক কাজে বাধা প্রদান আওয়ামী লীগের নীতি নয়।”
এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেতুমন্ত্রী নোয়াখালীতে স্থাপিত কোভিড হাসপাতালের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে দুটি আইসিইউ ইউনিট ও ভেন্টিলেটরের যন্ত্রপাতি হস্তান্তর করেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ সেসব সরঞ্জাম গ্রহণ করেন।
/এএ