রেমিট্যান্স ক্ষতি পোষাতে বিকল্প আয় বের করতে হবে

রেমিট্যান্স ক্ষতি পোষাতে বিকল্প আয় বের করতে হবে

রেমিট্যান্স ক্ষতি পোষাতে বিকল্প আয় বের করতে হবে

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বিশ্ব লকডাউনে স্থবির হয়ে আছে। কোথাও কোথাও একটু একটু করে খুললেও খুব দ্রুত রেমিট্যান্সের ঊর্ধ্বগতি হবে বলে মনে হয় না। দেশের অর্থনীতি সুরক্ষায় বিকল্প পথ খুঁজে বের করতে হবে। বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গে দেশের আয়ের সবচেয়ে বড় প্রাণভোমরা আবার চাঙ্গা হবে। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা দেশের রেমিট্যান্স পাঠানোর নায়কেরা আবার কাজে ফিরবে। এ প্রত্যাশা আমাদের সবার। বিশ্ব অর্থনীতিতে বারবার মন্দা আঘাত হানলেও রেমিট্যান্স আয়ের রমরমার কারণে সে আঘাত কখনো অনুভূত হয়নি। কিন্তু দুনিয়াজুড়ে করোনাভাইরাসের থাবায় প্রথমবারের মতো রেমিট্যান্স আয়ে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে।

গত বছরের শেষের দিকে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রার কারণে রাজস্ব আদায়, আমদানি-রপ্তানিসহ অর্থনীতির বড় সূচকগুলো নাজুক অবস্থায় চলে গেলেও চাঙ্গা ছিল একমাত্র রেমিট্যান্স প্রবাহ। কিন্তু ডিসেম্বরের শেষ দিকে কভিড-১৯ আতঙ্ক শুরু হলে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা প্রবাসী শ্রমিকদের আয়ে। কভিড-১৯ মহামারী রূপ নিলে জীবন বাঁচাতে ফেব্রুয়ারি ও মার্চে প্রবাসী শ্রমিকদের দেশে ফেরার ঢল নামে। সে সময় দুই লাখের বেশি প্রবাসী দেশে ফিরে আসেন।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের আশঙ্কা, অন্তত ১০ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিক কাজ হারাবেন করোনার প্রভাবে। একই সঙ্গে ডিসেম্বরের পর থেকে করোনাভাইরাস আতঙ্কে দেশে দেশে লকডাউন ঘোষণা করায় ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ এবং সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি শ্রমিকরা কার্যত কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এখনো তারা কর্মহীনই রয়েছেন। বিদেশের মাটিতে কর্মহীন হয়ে পড়ায় সেখানে নিজেদের জীবন চালাতেই হিমশিম খাচ্ছেন প্রবাসীরা। ফলে তারা আর আগের মতো রেমিট্যান্স পাঠাতে পারছেন না।

ফলে ঝুঁকিতে পড়েছে রেমিট্যান্স আয়। করোনার থাবায় বিশ্ব অর্থনীতির চাকা থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। বিশেষত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সমীক্ষায় বাংলাদেশের ১০ লাখ প্রবাসী কর্মহীন হয়ে পড়লে তাদের পাঠানো শত শত কোটি টাকার রেমিট্যান্স থেকে দেশ যেমন বঞ্চিত হবে তেমন ১০ থেকে ১২ লাখ লোক দেশে ফিরে এলে তাদের খাদ্য জোগান এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি হবে।

বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় জিডিপি প্রবৃদ্ধির দেশ হিসেবে যে ঈর্ষণীয় অবস্থান গড়ে তুলেছে তাও নড়বড়ে হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সান্ত¡না শুধু এ টুকুই বিশ্বের সব দেশই করোনা ভাইরাসের বিপজ্জনক মন্দার শিকার। আমরা মনে করি, এ কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারকে সব ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রতার নীতি গ্রহণ করতে হবে। কীভাবে রেমিট্যান্স আয়ের ক্ষতি পোষানো যায় সেপথও খুঁজে বের করতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *