রোজাদার সন্তানের প্রতি যত্ন

রোজাদার সন্তানের প্রতি যত্ন

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : চলছে রমজান মাস। বড়দের পাশাপাশি ছোটরাও এসময় রোজা রাখার বায়না ধরে। সেক্ষেত্রে শিশুদের রোজা পালনে শিশুর শারীরিক কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখার কথা জানিয়েছেন শিশু বিশেষজ্ঞ ফারহানা পারভীন ফ্লোরা।

প্রায় ১৫ ঘণ্টা না খেয়ে থাকা শিশুদের জন্য যেমন কষ্টকর তেমনি ক্ষতিকরও বটে। তবে শিশু যদি একান্তই বায়না ধরে রোজা রাখার তাহলে প্রথম দিকে তাকে অর্ধেক সময় রোজা রাখতে বলুন। অর্থাৎ সেহেরি খেয়ে দুপুর অব্ধি রোজা রাখতে বলুন। এতে সে ধীরে ধীরে রোজা ব্যাপারটির সঙ্গে অভ্যস্ত হবে।

শিশু রোজা রাখতে চাইলে অনেক সময় অভিভাবকরা জোর করে সেহেরিতে বেশি খাবার খাওয়াতে চান। এ কাজটি করবেন না। একসাথে বেশি খাবার খেতে গেলে তারা অসুস্থ হয়ে যাবে। তার চেয়ে বরং সে যতটুকু খাবার খেয়ে অভ্যস্ত তাকে ততটুকুই খাবার দিন।

দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে শিশুর দেহে গ্লুকোজ সরবরাহ কমে যায়। যার ফলে শিশুর প্রাত্যহিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা থাকে। সেহেরিতে শিশু যেন প্রয়োজনের তুলনায় কম খাবার না খায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

সেহেরিতে শিশুকে এমন খাবার দিন যা সে সহজেই খেতে পারবে এবং শরীরের ক্ষতির কারণ হবে না। সেক্ষেত্রে খাদ্যতালিকায় রাখুন ভাত, ডাল, সবজি এবং মাংস জাতীয় খাবার। তবে এসময় মাছ না দেওয়াই ভালো। কারণ অনেক শিশুই মাছ খেতে আপত্তি করে। চাইলে রাখতে পারেন ডিম ।

খাবার খাওয়ার পর এক গ্লাস দুধ পান করাতে পারলে সারাদিনের পুষ্টি নিয়ে আর ভাবতে হবে না। খালি দুধ খেতে না চাইলে দুধ আর কলা মিশিয়েও দিতে পারেন। দুধ শিশুর শরীরে ক্যালসিয়ামের জোগান দেয়। দুধের আরেকটি উপকারিতা হলো এটি অনেকক্ষণ পাকস্থলীতে থাকে।

অন্য সময়ের চাইতে রোজায় শিশুদের একটু বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে। এসময় রোদে বা গরমে বেশি সময় বাইরে খেলাধুলা না করাই ভালো। রোজা রেখে বেশি খেলাধুলা করলে শিশু অসুস্থ হয়ে যাবে। বেশি সময় রোদে থাকলে শিশুর মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব, চোখে ঝাপসা দেখা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।

বড়দের তুলনায় শিশুদের দেহে সহজেই পানির ঘাটতি দেখা যায়। তাই ইফতার ও সেহেরির মাঝে শিশু যেন সাত থেকে দশ গ্লাস পানি পান করে সেদিকে খেয়াল রাখুন। সারাদিনের রোজা শেষে ইফতারে শরবত ও পানীয় দিন।

ইফতারে শিশুকে মসলাযুক্ত ও ভাজা পোড়া খাবার না দেওয়াই ভালো। এসময় শিশুকে পাতলা খিচুড়ি, দই চিড়া, সবজি বা মাছ/মাংস দিয়ে রান্না করা নুডলস ইত্যাদি খেতে দিন। ইফতারে একবারে অনেক খাবার না দিয়ে অল্প সময় পর পর শিশুকে খেতে দিন।

রোজা রাখলে শিশু যেন পর্যাপ্ত ঘুমায় সেদিকে খেয়াল রাখুন। রাতে যত তাড়াতাড়ি পারা যায় তাকে ঘুম পাড়িয়ে দিন। দিনের বেলায় দুপুরের পর কিছুক্ষণ ঘুমালে ক্লান্তি কম হবে।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *