রোবটের মাধ্যমে হার্টের রিং পরানোর যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ

রোবটের মাধ্যমে হার্টের রিং পরানোর যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : প্রথমবারের মতো হৃদরোগ চিকিৎসায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তি রোবটিক এনজিওপ্লাস্টি (রোবট দিয়ে হার্টের রিং পরানো) যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ।

গত রবিবার (২১ জানুয়ারি) বাংলাদেশের হৃদরোগের বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে দুজন হৃদরোগীর প্রধান ধমনীতে বিনামূল্যে রোবটের মাধ্যমে রিং পরানো হয়।

হাসপাতালটির সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকারের নেতৃত্বে একটি বিশেষায়িত দল এ কার্যক্রম সম্পাদন করে।

এই চিকিৎসা পদ্ধতিটির উদ্বোধন করেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল হাসান মিলন ও কার্ডিলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. সালাউদ্দিন।

চিকিৎসকরা জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতসহ বিশ্বে ১৬০টি দেশে রোবোটিক এনজিওপ্লাস্টি (রোবট দিয়ে হার্টের রিং পরানো) সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে ভারতে ছয়টি সেন্টার রয়েছে।

ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার জানান, রোবটিক এনজিওপ্লাস্টি বর্তমান পৃথিবীতে হার্টের রিং পরানোর সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। কার্ডিওলজিস্টরা এখনও ক্যাথল্যাবে নিজেরা রোগীর কাছ থেকে রোগীদের হার্টের রিং পরান। এর সর্বশেষ আবিষ্কার হলো রোবোটিক এনজিওপ্লাস্টি অর্থাৎ রোবট দিয়ে হার্টের রিং পরানো। এর মাধ্যমে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা রোগীর চেয়ে দূরে থেকে নিখুঁতভাবে হৃদরোগীদের হার্টের ধমনীতে রিং পরান।

রোবটের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, “এই রোবটের দুটি অংশ থাকে। একটি হলো রোবটের একটি হাত; যা ক্যাথল্যাবে থাকে। আরেকটি থাকে কন্ট্রোল সেকশন, যেখান থেকে মূল কার্ডিওলজিস্ট পুরো রিং পরানো কার্যক্রমটি দূর থেকে সম্পন্ন করে থাকেন।”

রোবটিক এনজিওপ্লাস্টি বা রোবট দিয়ে হার্টের রিং পরানোর তিন ধরনের সুবিধা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “রোবটিক এনজিওপ্লাস্টির প্রথম সুবিধা হলো হার্টের রিং পরানোর জটিল প্রক্রিয়াটি রোবটের মাধ্যমে খুব সূক্ষ্ম ও নিখুঁতভাবে করা যায়। অনেক সময় হার্টের রিং নিখুঁতভাবে পজিশন করার জন্য এক মিলিমিটার সামনে অথবা এক মিলিমিটার পেছনে নেওয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু হাত দিয়ে করলে নিখুঁতভাবে এই কাজটি করা কঠিন হয় কিন্তু রোবটের মাধ্যমে নিখুঁতভাবে এটি সম্পন্ন করা যায়।”

রোগীদের জন্য আরেকটি সুবিধা হল হৃদরোগ চিকিৎসকগণ সরাসরি এনজিওপ্লাস্টি করতে গেলে যে সময় লাগে, রোবটের মাধ্যমে সেটি করতে অনেক কম সময় লাগে বলেও জানান এই চিকিৎসক। তিনি বলেন, “যে কারণে অল্প সময়ে বেশি রোগীর চিকিৎসা সেবা দেওয়া যায়। হার্টের ভেতরে ক্যাথেটার, ওয়্যার (তার), বেলুন, রিং যত কম সময় রাখা যায়, রোগীর জন্য তত নিরাপদ। তাই রোবটিক এনজিওপ্লাস্টির মাধ্যমে রিং পরাতে সময় কম লাগে বলে জটিলতাও কম হয়।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *