রোহিঙ্গা সঙ্কট লাঘবে বিশ্ব সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসা উচিত

রোহিঙ্গা সঙ্কট লাঘবে বিশ্ব সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসা উচিত

রোহিঙ্গা সঙ্কট লাঘবে বিশ্ব সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসা উচিত

দিন দিন রোহিঙ্গারা এক অসহায় জাতি হিসেবে রূপ নিচ্ছে। মিয়ানমার যেনো পৃথিবীর চেয়েও বড় এবং শক্তিধর। এমন আচরণই দেশটি দেখিয়ে চলেছে। রোহিঙ্গাদের এই অসহায়ত্ব লাঘবে বিশ্বের যেনো কোনো দায় নেই। দ্রুত এদের সমস্যা সমাধানে বিশ্ব সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসা উচিত বলেই মনে করেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকগণ। রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে বাংলাদেশকে সহায়তার আগ্রহ দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ড. মার্ক টি এসপার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করে সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে সহায়তার আশ্বাস দেন। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী কভিড-১৯ মহামারী ও রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নেওয়া পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেন। টেলিফোন আলোচনায় তাঁরা সব দেশের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে একটি অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের প্রতি তাঁদের যৌথ প্রতিশ্রুতি নিয়ে কথা বলেছেন।

সামুদ্রিক ও আঞ্চলিক সুরক্ষা, বৈশ্বিক শান্তিরক্ষা ও বাংলাদেশের সামরিক সামর্থ্য আধুনিকীকরণের উদ্যোগসহ সুনির্দিষ্ট দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষাবিষয়ক অগ্রাধিকারগুলো নিয়েও আলোচনা হয়। পারস্পরিক স্বার্থ ও মূল্যবোধের সমর্থনে ঘনিষ্ঠ দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সম্পর্ক অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্তও করেছেন তাঁরা। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এমন একসময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেছেন যখন মিয়ানমারের মানচিত্র থেকে রোহিঙ্গা গ্রামগুলোকে নিশ্চিহ্ন করা হচ্ছে।

তিন বছর আগে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রাম ‘কান কিয়া’য় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর পুরো গ্রাম বুলডোজার দিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী গত বছর মিয়ানমার সরকার নতুন যে মানচিত্র তৈরি করেছে সেখানে কান কিয়া গ্রামের অস্তিত্ব নেই। মানচিত্র থেকে গ্রামটির নাম মুছে ফেলা হয়েছে। কান কিয়া গ্রামটি আগে যেখানে ছিল সেখানে এখন ডজনের বেশি সরকারি ও সামরিক ভবন গড়ে উঠেছে। এমনকি ভূ-উপগ্রহের ছবিতে পুলিশ ঘাঁটির জন্য দেওয়া আঁকাবাঁকা বেড়াও দেখতে পাওয়া যায়। গত ছয় মাসে বিশ্বসমাজ কভিড-১৯ সংকট নিয়ে ব্যস্ত থাকায় মিয়ানমার রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পথগুলোও বন্ধ করতে ব্যস্ত। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো প্রথম থেকেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে মিয়ানমারকে বাধ্য করার পক্ষে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের অভিন্ন বন্ধু চীনের অনুরোধে বাংলাদেশ সংঘাত এড়ানোর পথই বেছে নিয়েছে। আশা করা যায়, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সহায়তার আশ্বাস মিয়ানমার ও তার মুরব্বিদের সুমতি ফেরাতে সহায়তা করবে।

আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ককে গুরুত্ব দিতে চাই। তবে এ সদিচ্ছাকে দুর্বলতা ভাবলে বাংলাদেশের নীতি-অবস্থান পাল্টানোর যে বিকল্প থাকবে না, তা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে বুঝতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *