সবুর করে বসে থাকবো
তোমার চোখ বিস্ময়ের আস্তানা—হাসি মধুর মৌচাক—আমি নিজেই প্রকম্পিত হই এক লমহা দেখি যখন—মনে হয়, যেন আমি তারের স্পন্দনের মধ্যে ঝুলে থাকা বেহালা এক। শেষ বাজির সমস্ত শক্তি দিয়ে তোমাকে হাতের তালুতে তুলে রাখবো। তোমার শুভ্র কোমলতা দিয়ে শৈশবের উর্বর চারণভূমি আঁকব। চিরন্তন প্রবাহিত প্রেমের শরাব দিয়ে হৃদয় কলস পূর্ণ পূর্ণ করে রাখবো কানায় কানায়।
জড়িয়ে রাখবো সুঘ্রাণমাখা রুমালের মত গলায়। যখনই কোমলতার অভাব হবে তখনই এর ছায়ায় আশ্রয় নেব। হারিয়ে যেতে দেব না কোনোদিন, হাড়ের মধ্যে লুকিয়ে রাখবো মজ্জার মতো—যেন বসন্ত বসন্ত অনুভব হয় শিরায় উপশিরায় আমার। ভোরে আচ্ছন্ন করে রাখবো নির্মলতায় । তোমার স্মৃতির বৃষ্টি উপভোগ করবো—শীতলতা যেন তুমুলভাবে আত্মাকে সান্ত্বনা দেয়।
তোমাকে নিয়ে যাবো স্বপ্নের চূড়ায়—মায়াবী অই চোখের রশ্মি ব্যবহার করে জীবনের তিমির পথ পাড়ি দেবো নির্ভয়ে। হৃদয়ের স্বচ্ছতা দিয়ে কুয়াশাচ্ছন্ন এই অসীম দিগন্তে হেঁটে যাবো, সেখানেও তোমার জন্য অপেক্ষা করবো—সবুর করবো অবোধ শিশুর মতো।
পরম প্রান্তে, সেখানেও তোমাকে সম্পূর্ণরূপে মনে রাখবো—সুরা ফাতিহার মতো।
আমি যেন এতিম বৃক্ষ
গাছের পাতাগুলোকে
বুড়ো হয়ে ঝরতে দেখবে
শীতের হীম বাতাস যখন
বইতে শুরু করে
কিশলয় ছাওয়া গাছগুলো
কেমন নিদারুণ পত্রশূন্য
আমি যেন এই ঝরা পাতা
কিংবা এতিম বৃক্ষের মতো
ছায়ার মতো বড়ো চুপচাপ, দাঁড়িয়ে—
তাকিয়ে আছি অপলক।
তুমি তাকালে অভিমান ভোলে যাই
কেন জানি না, আপনার সাথে—
কথা বলতে ভালো লাগে
কিছু লিখতে বসলে আপনাকে নিয়ে
কাগজ থেকে কলম সরাতে পারি না
যতক্ষণ না শেষ হয়, রসঘন আবেগময়
একটি মাছুম কবিতা
কেন জানি না, আমি সব সময়—
আপনার শিশুসুলভ আচরণে
মুগ্ধতার শিকার হই—আর
আপনার কথা চরমভাবে বিশ্বাস করি
যখন চশমার কাঁচের ভেতর থেকে—
তাকাতে দেখি আমার দিকে
তাসের টাওয়ারের মতো ভেঙে যায়
অভিমান, অভিযোগ সমস্ত কিছু
হৃদয়ের পৃষ্ঠে বন্ধুত্বের যে আঁচড় রেখেছেন
এ জীবন ফুরিয়ে গেলে
মুছবে না কোনোদিন, কোনকালে
কেন জানি না, আপনি সামান্য রাগ হলে,
ভূতের মতো তাড়া করে আমাকে
নীল নীল বেদনার মিছিল
আমি সব মুছে ফেলি দুঃখ যাতনা
যেভাবে মুছে ফেলে শিশুরা
কালো শ্লেটে অগোছালো বর্ণমালা
আপনার ওপর ক্রোধ নেই এক রত্তি
আমার অগাধ বিশ্বাসের দেয়ালজুড়ে
নির্মোহ ভালোবাসার প্রলেপমাখা
বিশ্বাস করি আমি,
বন্ধুত্বের বাঁধন ছিঁড়ে না কোনোদিন…..