শহীদ মিনারে বুলবুলের লাশ, সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

শহীদ মিনারে বুলবুলের লাশ, সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

পাথেয় রিপোর্ট : কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হয়েছে সুরকার, গীতিকার ও মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের লাশ। সেখানে গুণী এ শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ। একে একে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে থাকেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন। এ সময় সেখানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বুলবুলের দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা শেষবারের মতো তাকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বুধবার বেলা ১১টার কিছু সময় আগে বুলবুলের লাশ শহীদ মিনারে নেয়া হয়। এর আগে লাশ ছিল ঢাকার একটি হাসপাতালের হিমঘরে। সেখান থেকে লাশবাহী গাড়ি শহীদ মিনারে পৌঁছলে চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিনিধিরা তা গ্রহণ করেন।

শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো শেষে বেলা ১২টায় লাশ নেয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে। মসজিদ প্রাঙ্গণে বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হবে তার প্রথম জানাজা। জানাজা শেষে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি)। সেখানেও তার জানাজা হবে। বরেণ্য এ শিল্পীর লাশ শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।

অসংখ্য বাংলা জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) ভোর ৪টার দিকে রাজধানীর বাড্ডায় নিজ বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বরেণ্য গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে সংগীত ও শিল্পাঙ্গনে। তার অকালে চলে যাওয়া সহকর্মীদের কেউ মেনে নিতে পারছেন না। শোকে স্তব্ধ সবাই।

প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দেশের একজন সংগীত ব্যক্তিত্ব। একাধারে গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক। ১৯৭০ দশকের শেষ লগ্ন থেকে আমৃত্যু বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পসহ সংগীতশিল্পে সক্রিয় ছিলেন।

তিনি রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং রাষ্ট্রপতির পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি ১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৭৮ সালে মেঘ বিজলী বাদল ছবিতে সংগীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। তিনি স্বাধীনভাবে গানের অ্যালবাম তৈরি করেছেন এবং অসংখ্য চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন।

সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, সৈয়দ আবদুল হাদি, এন্ড্রু কিশোর, সামিনা চৌধুরী, খালিদ হাসান মিলু, আগুন, কনক চাঁপাসহ বাংলাদেশি প্রায় সব জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীদের নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল নিয়মিত গান করেন ১৯৭৬ সাল থেকে।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের মাঝামাঝিতে বুলবুলের হার্টে আটটি ব্লক ধরা পড়ে। পরে তার শারীরিক অবস্থার কথা জানতে পেরে চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার পর বুলবুলকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা বুলবুলের বাইপাস সার্জারি না করে শরীরে রিং পরানোর সিদ্ধান্ত নেন। এরপরে তার শরীরে দুটি স্টেন্ট (রিং) স্থাপন শেষে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেন তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *