শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ের মধ্যে বেঁধে রাখলে চলবে না: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ের মধ্যে বেঁধে রাখলে চলবে না: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষাখাতে পদ্মা সেতুর চেয়ে বড় প্রকল্প হাতে নিতে হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। রাজশাহী জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানের সঙ্গে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত নগরীর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ডা. কাইছার রহমান চৌধুরী অডিটোরিয়ামে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের শিক্ষা নিয়ে যে চ্যালেঞ্জগুলো আছে, তা শিক্ষা পরিবারের সঙ্গে বসে আলোচনা করে নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে অবশ্যই আগামীতে সমাধান করা হবে। সেটা করার জন্য প্রয়োজনে আমাদের শিক্ষা খাতে পদ্মা সেতুর চেয়ে বড় মেগা প্রকল্প হাতে নিতে হবে। সেই প্রকল্প শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য নয়। শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের উপকারের জন্য। কারণ শিক্ষকদের দক্ষতা, মান, অভিজ্ঞতায় যদি আমরা বিনিয়োগ করি, তাহলে শিক্ষার্থীরা বেশি উপকৃত হবে। শিক্ষার্থীরা উপকৃত হলে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখছেন ও অঙ্গীকার করেছেন, তা বির্নিমাণ হবে।

মধ্যে গতানুগতিক চিন্তার বাইরেও ভাবতে হবে। শিক্ষাকে কীভাবে সার্বজনীন ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে আনতে পারি, তা নিয়ে আমরা ভাববো।

কঠিন অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করার কথা বলে মহিবুল হাসান চৌধুরী আরও বলেন, যাত্রার মধ্যে গতানুগতিক চিন্তার বাইরেও ভাবতে হবে। শিক্ষাকে কীভাবে সার্বজনীন ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে আনতে পারি, তা নিয়ে আমরা ভাববো।

ধর্মনিরপেক্ষ ও অসাম্প্রদায়িক শিক্ষা কাঠামোর মাধ্যমে দক্ষতা ও যোগ্যতা দিয়ে বৈশ্বিক নাগরিক হিসেবে শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলতে করণীয় তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তরুণ সমাজকে নিয়ে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজ করে যাচ্ছি। একজন শিক্ষার্থীর কর্মজীবনে প্রবেশের মাধ্যমে সারা পৃথিবীর পরিবর্তন হচ্ছে। পৃথিবীর যত প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিষ্ঠানের কর্মী আছেন, তারা এখন আর সনদ দেখতে চায় না। তারা দেখতে চান সক্ষমতা। কাজটা করার সক্ষমতা তার আছে কিনা, সেটা দেখতে চান। কাজের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসছে। কাজের নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ের মধ্যে বেঁধে রাখলে চলবে না। সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার মধ্যে কাজ করার যে দক্ষতার প্রয়োজন, তা নিয়ে কাজ করতে হবে।

উন্নত বিশ্বে প্রথম সারির প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি রেস্টুরেন্টে কাজ করে জানিয়ে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, কাজের পাশাপাশি শিক্ষা গ্রহণ করেন শিক্ষার্থীরা। আবার অনেকে অ্যাকাডেমিক শিক্ষায় গ্যাপ দিয়ে দক্ষতা অর্জনে বিভিন্ন কাজ করেন। আমাদের শিক্ষার্থীদের সে ধরনের মানসিকতা তৈরি করতে হবে। শিক্ষার্থীদের শিখতে হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শফিকুর রহমান বাদশা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।

এতে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. অলীউল আলম প্রমুখ। সভায় শিক্ষকরা শিক্ষকদের চাকরির জাতীয়করণ, মাধ্যমিক স্তরে আইসিটি শিক্ষক ও লাইব্রেরিয়ান পদ সৃষ্টি, বেতন ও ভাতার সমস্যা দূরীকরণ, ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধিসহ নানা দাবি তুলে ধরেন।

এর আগে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহিদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান ও তার স্ত্রী জাহানারা জামানের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান বাদশা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সোলেমান খান, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য যুব মহিলা লীগের সদস্য আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. রেজভী আহমেদ ভূঁইয়া।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *