পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : শিক্ষার উন্নয়ন ও বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে দেশের উন্নয়ন ও পথিকৃৎ মাওলানা আবুল কালাম আজাদের জীবনাদর্শ ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও গবেষকদের সামনে বেশি করে তুলে ধরার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞমহল।
১৭ ডিসেম্বর সোমবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসে বিএড বিভাগ আয়োজিত ‘লাইফ অ্যান্ড এডুকেশনাল ফিলোজফি অব মাওলানা আবুল কালাম আজাদ সমাজে তাঁর অবদান ও প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক এক জাতীয় সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
এই সেমিনারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ও জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের রাজ্য সভাপতি মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি মাওলানা আবুল কালাম আজাদের অবদান বর্ণনা করেন।
মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি বলেন, রাসূল সা. সবসময় শিক্ষার উপর জোর দিয়েছেন। আর রাসূল সা.-এর আদর্শ অনুসারেই মাওলানা আবুল কালাম শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। স্বাধীন ভারতে তিনি শিক্ষার পরিকাঠামোকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), আইআইটি, বিভিন্ন একাডেমি, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড অথবা পর্যদ, শিক্ষা কমিশন প্রভৃতি। একদিকে শিক্ষা ও অন্যান্য দিক দিয়ে দেশকে এগিয়ে দেওয়ার ভাবনা ও অবদান অপূরণীয়।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য উদ্দেশ্যে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি বলেন, মাওলানা আজাদ আইন, রাজনীতিসহ বিভিন্ন বই পড়তেন। বিভিন্ন বিষয়ে জানতে আমাদেরও বই পড়তে হবে। তার জন্য সবরকম সহযোগিতা ও প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে রাজ্য গ্রন্থাগার দফতর।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য ড. মুহাম্মদ আলী বলেন, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ শিক্ষার প্রতিকাঠামো তৈরি করার পাশাপাশি প্রাথমিক, স্কুল, উচ্চ, প্রযুক্তি প্রভৃতি শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি সর্বধর্মের মানুষের সঙ্গে কাজ করেছেন সারাজীবন।
এই দিনের আলোচনা চক্রে বারসাত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাসব চৌধুরি বলেন, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ছিলেন ত্যাগের প্রতীক। তাই জীবনে এগোতে হলে আমাদেরও প্রয়োজন ত্যাগ। ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থাকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে মাওলানা আজাদ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাত্রছাত্রী-শিক্ষকদের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটানোর চেষ্টা করেছেন।
রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ডিন সনৎ কুমার ঘোষ তার বক্ত্যবে বলেন, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ছিলেন ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রের অগ্রগতির পথিকৃৎ। তাই তাঁর ভাবনাগুলো গবেষণা ও আলোচনার মাধ্যমে তুলে ধরার প্রয়োজন রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মিতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আলিয়ার রেজিস্টার ড. নুরসর আলী মাওলানা আবুল কালাম আজাদের গুরুত্ব ও আদর্শ আরোপ করেন।
এই সেমিনার উপস্থিত ছিলেন, রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনার ওবাইদুর রহমান, আলিয়ার বিএড বিভাগের প্রধান ড. জাকির হোসেন, ডেপুটি রেজিস্টার ড. আসফাক আলী, ডিন অব স্টুডেন্টের অধ্যাপক আমজাদ হোসেন, আরবি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, মির রেজাউল করিম, রেশমা খাতুন সহ একাধিক বিএড শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় প্রধানরা।
উল্লেখ্য, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়রের পার্ক সার্কাস অডিটোরিয়মে বিএড বিভাগের উদ্যোগে জাতীয় এই সেমিনার শেষ হয় ১৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার। গবেষক ও ছাত্রছাত্রীদের সামনে বিশিষ্টদের বক্তব্যে মাওলানা আবুল কালাম আজাদের জীবন ও আদর্শ তুলে ধরা হয়।
গ্রন্থনা : আদিল মাহমুদ
সম্পাদনা : মাসউদুল কাদির
তথ্যসূত্র : পশ্চিম বাংলা, রাজ্য জমিয়তে উলামা হিন্দ