পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ভারতে ১৯৮৪ সালের শিখ বিরোধী দাঙ্গার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। ১৭ ডিসেম্বর সোমবার দিল্লি হাইকোর্ট ওই রায় দিয়েছে বলে জানা যায়।
১৯৮৪ সালে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী শিখ দেহরক্ষীর গুলিতে নিহত হওয়ার পরে শিখবিরোধী ভয়াবহ দাঙ্গার ঘটনায় ৩ হাজার ৩২৫ জন নিহত হয়েছিলেন। এরমধ্যে কেবল দিল্লিতেই ২ হাজার ৭৩৩ জন নিহত হন। অন্যরা হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে নিহত হন।
সজ্জন কুমারকে দিল্লি ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, সহিংসতা সৃষ্টি ও দাঙ্গায় উসকানির ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এরআগে ১৯৮৪ সালের শিখ দাঙ্গা মামলায় ২০১৩ সালে কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমারকে নিম্ন আদালত নিরপরাধ বলে রেহাই দিয়েছিল। কিন্তু সাবেক কংগ্রেস নেতা বলবান খোকর, ক্যাপ্টেন ভাগমল, গিরিধারী লাল এবং অন্য দু’জনকে নিম্ন আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছিল। বলবান খোকর, ক্যাপ্টেন ভাগমল, গিরিধারী লালকে আদালত সেসময় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। এছাড়া, মহেন্দ্র যাদব ও কিষাণ খোকরকে তিন বছর করে কারাদণ্ড হয়।
নিম্ন আদালতের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় সাজাপ্রাপ্তরা। এছাড়া সিবিআই ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে সজ্জন কুমারকে রেহাই দেয়ার বিরুদ্ধে দিল্লি হাই কোর্টে আবেদন করা হয়।
দিল্লি হাই কোর্টের ওই রায়কে বিজেপি, আম আদমি পার্টি ও অকালি দলের পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
এদিকে, বিজেপি নেতা অরুণ জেটলিসহ অন্যরা দিল্লি হাইকোর্টের ওই রায়কে হাতিয়ার করে কংগ্রেসের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত সজ্জন কুমার ও মধ্য প্রদেশের সদ্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়া কমলনাথের বিরুদ্ধেও শিখবিরোধী দাঙ্গায় জড়িত থাকার অভিযোগ উত্থাপন করে কংগ্রেসকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছে বিজেপি। পাল্টা জবাবে কংগ্রেস বলেছে, আদালতের রায়কে রাজনৈতিক রং দেয়া উচিত নয়। সজ্জন কুমার কোনও পদে ছিলেন না। তাকে নির্বাচনে টিকিটও দেয়া হয়নি।
নরেন্দ্র মোদি মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার কথা উল্লেখ করে কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা কপিল সিব্বল বলেছেন, কমলনাথের বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর হয়নি। যদি কমলনাথ দোষী হন, তাহলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও দোষী। তাঁর বিরুদ্ধেও কমলনাথের মতো অভিযোগ আছে। উনি কীভাবে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন এর তদন্ত হওয়া উচিত। প্রসঙ্গত, নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০২ সালে ভয়াবহ মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা হয়েছিল।