১৯৭৫ সালের এই দিনে বাংলাদেশের জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। বাঙালি জাতীর জীবনে এ এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। বুধবার ২০১৭ সালে দাঁড়িয়ে তরুণ আলেম সমাজ বঙ্গবন্ধুকে কীভাবে দেখেন তা জানার জন্য পাথেয়’এর মুখোমুখি হয়েছিলেন জামিআ ইকরা বাংলাদেশের সিনিয়র মুহাদ্দিস, তরুণ প্রতিশ্রুতিশীল লেখক, গবেষক মুফতি ফয়যুল্লাহ আমান। কথা বলেছেন পাথেয় প্রতিবেদক নাঈম ইসলাম।
পাথেয় : আপনি একজন আলেমে দীন হিসাবে এই হত্যাকাণ্ডকে কীভাবে দেখেন?
ফয়যুল্লাহ আমানঃ দেখুন ইসলামে যে কোন ধরনের হত্যাই নিষেধ আর বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত নির্মম, অমানুসিক দেখুন শিশু রাসেল ওর কি দোষ? তাও ওকে হত্যা করা হয়েছে এই হত্যাকাণ্ড আসলেই মানবতাবিরোধী অপরাধ।
পাথেয় : আপনি কি মনে করেন, বঙ্গবন্ধু ওলামায়ে কেরাম ও ইসলামের জন্য যে কাজগুলো করেছেন অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানরা অতটা আন্তরিকতার সাথে কাজ করেন নি।
ফয়যুল্লাহ আমান : দেখুন আন্তরিকতা আছে কি না এটা আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলতে পারবেন কারণ মানুষের মনের খবর তো আমরা জানি না তবে হ্যা বঙ্গবন্ধুর ইসলামের জন্য অনেকগুলো মৌলিক কাজ করে গেছেন যেমন ইসলামিক ফাউন্ডেশন, তাবলিগ জামাতের মারকাজ কাকরাইলের জন্য যায়গা দেওয়া, বিশ্ব ইজতিমার জন্য যায়গা দেওয়া এই ধরনের আরো অনেক কাজ তিনি করেছেন ,
পাথেয় : আমরা লক্ষ করেছি কেউ কেউ তার মৃত্যুতে উল্লাশ প্রকাশ করে এটা কতটা যুক্তিসঙ্গত কাজ?
ফয়যুল্লাহ আমান : আমি তো কোন আলেম বা কাউকে উল্লাশ করতে দেখি নি তবে হাল জামানায় বেশ কবছর ধরে দেখছি বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ওনার লোকেরা এই দিনে জন্মদিন পালন করেন কিন্তু কোন আলেমকে আমি কখনো উল্লাশ করতে দেখি নি ।
পাথেয় : আপনি কি মনে করেন যে, বঙ্গবন্ধু নেতা হিসাবে যে বিপুল জনপ্রিয়তা ছিলো স্বাধীনতার পর রাষ্ট্র প্রধান হিসাবে তা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছিল।
ফয়যুল্লাহ আমান : দেখুন পৃথিবীর যত বড় নেতাই হোক না কেন প্রত্যেকেই সবার মন জয় করতে পারে না এই যেমন ধরেন মহাত্মা গান্ধী ,জিন্নাহ এদের সবাইকেই প্রচুর সমালোচনা করা হয়েছে এমনকি তাদের ব্যাপারে বইও বেরিয়েছে। স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশে অনেক সমস্যা তৈরী হয় এবং তাই স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি কিছু কিছু মানুষের বিরূপ মনোভাব তৈরী হতেই পারে কিন্তু আমাদের দেখতে হবে একটা যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশকে ঢেলে সাজাবার জন্য যে সময় প্রয়োজন তা তিনি পাননি। তাই তিনি নেতা হিসাবে সফল না রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে সফল তা বলা একটু মুশকিল। আগামী প্রজন্ম হয়তো আরো ভালোভাবে বলতে পারবে তার সফলতা বা ব্যার্থতা সম্পর্কে। তবে কুরআন আমাদের শিক্ষা দেয়, অতীতে যারা চলে গেছেন তার দোষ ত্রুটি না ধরা বরং তারা এক জাতি তারা যা করেছে তার হিসাব তারা আল্লাহ্র কাছে দেবে আর তোমরা যারা বর্তমান প্রজন্ম তোমদের দায় দায়িত্ব তোমাদের উপর তাই পিছনের দোষ নয় সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াই কাম্য।