শীতের পাখির জীবন ঝুঁকি
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : শীতের পাখির এবার জীবন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আমরা জানি, শীত এলেই পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে এ দেশে। বছর শেষে আবারও শীতের আগমনী বার্তা। এবার সেপ্টেম্বরেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছে ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখি। ক্যাম্পাসে লাল শাপলাপূর্ণ লেকগুলোতে চলছে তাদের কিচিরমিচির আর জলকেলি। তবে করোনা প্রতিরোধে ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও দেখা যাচ্ছে বিপরীত চিত্র। ক্যাম্পাসে মাস্ক ছাড়া মানুষের সমাগম বাড়ায় বাড়ছে ভাইরাস সংক্রমণের শঙ্কা। অসচেতনভাবে মানুষ লেক ও যত্রতত্র ব্যবহূত মাস্ক-গ্লাভস ফেলায় পাখি ও পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট-বড় মিলিয়ে ২২টি লেক রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৬টি বড় লেকে সবচেয়ে বেশি পাখি থাকে। কিন্তু এবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে ও পরিবহন চত্বর-সংলগ্ন লেকে বেশি সংখ্যক এবং বোটানিক্যাল গার্ডেন-সংলগ্ন লেকে অল্প পাখি দেখা গেলেও ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টারের ভেতরের লেকে নেই কোনো পাখি। এছাড়া মীর মশাররফ হোসেন হল-সংলগ্ন বড় লেকে ও আল বেরুনী হল-সংলগ্ন লেকে অতিরিক্ত কচুরিপানার কারণে পাখি নেই।
পাখি বিশেষজ্ঞ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান বলেন, ক্যাম্পাসে বর্তমানে পাঁচ হাজারের মতো পাখি অবস্থান করছে। শীতের তীব্রতা বাড়লে তা হয়তো সাত-আট হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, এখন লেকগুলোতে পাঁচ প্রজাতির পাখি দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ছোট সরালি (দেশীয়), বড় সরালি, নর্দান শোভেলার, গার্গেন, আফ্রিকান কম্বডাক (১০ বছর পর এসেছে)। আশা করছি শীত বাড়লে লেঞ্জাহাঁস ও পচার্ড যোগ হবে। এদের বেশিরভাগই সাইবেরিয়া অঞ্চল থেকে আসে।
সরেজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন অফিস-সংলগ্ন ও পুরাতন প্রশাসনিক ভবন-সংলগ্ন লেকে ব্যবহূত মাস্ক ও চা পানের প্লাস্টিকের ওয়ানটাইম গ্লাস ভাসছে। বিশেষ করে পরিবহন চত্বরের দোকানগুলোর পেছনের লেকে প্লাস্টিকের গ্লাসের স্তূপ করা হয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পাসের প্রতিটি রাস্তা ও ভবনের পাশে পড়ে আছে ব্যবহূত মাস্ক-গ্লাভস। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, কাফেটারিয়া, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, পরিবহন চত্বর এলাকা ও উপাচার্যের বাসভবনে যাওয়ার রাস্তায় দেখা যায় এ দৃশ্য। এছাড়া পাখির ছবি ও ভিডিও ধারণের জন্য ঢিল ছুড়তে দেখা গেছে দর্শনার্থীদের।