শীতের সময় আমাদের ত্বক শুষ্ক এবং নিষ্প্রাণ হয়ে যায়। কিন্তু আপনি কি জানেন যে আপনি যা পান করেন তা আপনার ত্বকের হাইড্রেশন স্তরের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে? ডিহাইড্রেশন একটি সাধারণ শীতকালীন সমস্যা, এটি শুষ্ক ত্বকের পেছনে একটি প্রধান কারণ। ডিহাইড্রেশন এবং শুষ্ক ত্বকের মধ্যে সংযোগটি বেশ স্পষ্ট, কারণ তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।
ডিহাইড্রেশন এবং শুষ্ক ত্বকের মধ্যে সংযোগ কী?
শীতের মাসগুলোতে ডিহাইড্রেশন একটি সাধারণ সমস্যা, কারণ ঠান্ডা বাতাস আমাদের ত্বক থেকে আর্দ্রতা কেড়ে নিতে পারে। ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। তবে ভয় পাবেন না কারণ শুষ্ক ত্বকের বিরুদ্ধে লড়াই করার চাবিকাঠি কেবল আপনার ত্বকের যত্নের রুটিনেই নয় বরং আপনি সারাদিনে যা পান করেন তাতেও রয়েছে। পর্যাপ্ত তরল গ্রহণ করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে এবং শুষ্কতা প্রতিরোধের জন্য পানি অপরিহার্য। অন্যান্য হাইড্রেটিং পানীয়, যেমন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত গ্রিন টি, ভিটামিন সি-এর জন্য উষ্ণ লেবু পানি এবং ইলেক্ট্রোলাইটের জন্য ডাবের পানি ত্বকের স্বাস্থ্যে অবদান রাখে। বিপরীতভাবে, অ্যালকোহল এবং ক্যাফিনযুক্ত পানীয়র ডিহাইড্রেটিং প্রভাব থাকতে পারে, যা ত্বকের শুষ্কতা বাড়িয়ে তোলে। তাই ডিহাইড্রেটিং পানীয়ের বদলে হাইড্রেটিং পানীয় বেছে নেওয়া ত্বকের আর্দ্রতা বৃদ্ধি এবং শীতের শুষ্কতার বিরুদ্ধে লড়াই করার একটি সহজ কিন্তু কার্যকর উপায়। জেনে নিন, এই শীতে ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে কোন পানীয় পান করবেন-
১. পানি
পানি পানের বিষয়টি আমাদের অনেকের কাছেই খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ধরা দেয় না। এটি ত্বককে হাইড্রেটেড রাখার সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকর উপায়। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে তা আপনার ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা এবং নমনীয়তা বজায় রাখতে সাহায্য করবে, এটি ত্বককে টানটান রাখে এবং নিস্তেজ হতে বাধা দেয়। প্রতিদিন কম পক্ষে আড়াই লিটার পানি পান করার চেষ্টা করুন।
২. গ্রিন টি
গ্রিন টি হলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের একটি পাওয়ার হাউস। এতে রয়েছে প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য যা ত্বকের জন্য বিস্ময়কর কাজ করতে পারে। শুধুমাত্র আরামদায়ক থাকার জন্য নয় বরং আপনার ত্বকের হাইড্রেশনের মাত্রা বাড়াতে এককাপ গ্রিন টিতে চুমুক দিন। গ্রিন টি-তে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিক্যালকে দূরে রাখতে সাহায্য করে, ফলে ত্বক তারুণ্যদীপ্ত এবং প্রাণবন্ত দেখায়।
৩. লেবু ও হালকা গরম পানি
আপনার দিন শুরু করুন এক গ্লাস হালকা গরম লেবু পানি দিয়ে। সঠিক বিপাক এবং ত্বক হাইড্রেট রাখার জন্য এই পানীয় বেশ কার্যকরী। লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে, যা কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে, এটি ত্বককে প্রাকৃতিক আভা দেয়। পানির উষ্ণতা পাচনতন্ত্রকে প্রশমিত করতে সাহায্য করে, যা ত্বকের স্বাস্থ্যে অবদান রাখে।
৪. ডাবের পানি
ডাবের পানি গরমে যতটা পান করা হয়, শীতকালে ততটা চাহিদা থাকে না। কিন্তু গরমের মতো শীতেও এই পানি আপনার জন্য অনেক উপকার নিয়ে আসতে পারে। ইলেক্ট্রোলাইট দিয়ে পরিপূর্ণ ডাবের পানি একটি হাইড্রেটিং অমৃত যা শুধুমাত্র আপনার তৃষ্ণা মেটায় না বরং আপনার ত্বককে প্রয়োজনীয় পুষ্টিও দেয়। এটি চিনিযুক্ত পানীয়ের একটি সুস্বাদু এবং হাইড্রেটিং বিকল্প।
৫. শসা ও পুদিনা মেশানো পানি
শসা ত্বককে হাইড্রেটিং করে এবং পুদিনা যোগ করে সতেজতা। এই দুই উপাদান মেশানো পানীয় পান করুন। এতে ত্বকের ভেতরে আর্দ্রতা বজায় থাকবে এবং দূর হবে ত্বকের শুষ্কতা। এই পানীয় আপনাকে সারাদিন সতেজ অনুভূতি দেবে। তাই সকালটা শসা ও পুদিনা মেশানো পানি দিয়ে শুরু করতে পারেন।