শীত যাই যাই করলেও অসাবধান হওয়া যাবে না

শীত যাই যাই করলেও অসাবধান হওয়া যাবে না

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : শীত যাই যাই করলেও ভোরে বা সন্ধ্যায় এখনো কনকনে বাতাস ও কুয়াশা। শীতে যাঁদের স্বাস্থ্য নাজুক হয়ে পড়ে, এই সময় তাঁদের একটু বেশি সতর্ক থাকতে হবে। হাত, পা, কান, নাক, গাল—এসব জায়গায় সাধারণত ঠান্ডা বাতাস বেশি লাগে। তাই ভোরে বা রাতে বাইরে যেতে মোজা ও টুপি ব্যবহার করতে হবে।

কানে ঠান্ডা লেগে এবং তার সঙ্গে ভাইরাস সংক্রমণে মুখ একদিকে বাঁকা হয়ে যেতে পারে, যাকে বলে বেলস পালসি। যাঁদের হৃদ্‌রোগ বা হাঁপানি আছে, তাঁরা বাইরে ঠান্ডা হাওয়ায় হাঁটতে না গিয়ে এ সময় ঘরেই ব্যায়াম করুন। নাইট্রোমিন্ট স্প্রে হাতের কাছে রাখুন। কনকনে ঠান্ডায় বাইরে গিয়ে পরিশ্রম করলে বুক ভারী ভারী লাগলে বা বুকে ব্যথা অনুভব হলে জিহ্বার নিচে দুই স্প্রে নাইট্রোগ্লিসারিন নিয়ে নিন এবং দ্রুত কোনো হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চলে যান।

ডায়াবেটিক রোগীদের ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, কোলেস্টেরল অনিয়ন্ত্রিত থাকলে পায়ের রক্তনালিতে সঞ্চালন কম হয়। একে পেরিফেরাল ভাসকুলার ডিজিজ বলে। শীতে যখন গরম পানি ব্যবহার করবেন, তখন পরিবারের কাউকে বলবেন তাপমাত্রা অত্যধিক কি না দেখে দিতে। কারণ, ডায়াবেটিসের রোগীর স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতায় অনুভূতিহীনতা থাকতে পারে, না বুঝে তীব্র গরম পানিতে ত্বক পুড়ে যেতে পারে।

ডায়াবেটিসে রক্তনালি আক্রান্ত থাকলে ঠান্ডায় রক্ত সঞ্চালন কম হয়। এ কারণে হাত–পা ব্যথা ও নীল হয়ে যেতে পারে। তীব্র ঠান্ডায় নীল হয়ে যাওয়া হাত–পা হালকা উষ্ণ পানিতে দিয়ে গরম করতে হয়। সরাসরি গরম করার প্যাড বা হিটার ব্যবহার করলে ত্বক পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

হাঁপানি ও সিওপিডি রোগীদের উচিত হবে ঠান্ডা এড়িয়ে চলা। ৬০ বছরের অধিক বয়সীরা, যাঁদের ডায়াবেটিক, শ্বাসযন্ত্র, হৃদরোগ আছে এবং যাঁরা স্টেরয়েড নেন, তাঁদের ইনফ্লুয়েঞ্জা, স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনিয়ার টিকা নেওয়া থাকলে তীব্র শীতে ইনফেকশন ও নিউমোনিয়া থেকে হয়তো মুক্তি মিলবে।

কারও কারও ঠান্ডা পানিতে বা ফ্রিজ খুলতে গেলে হাত–পা নীল হয়ে যায়, এটাকে বলে রেনড সিনড্রোম। কম বয়সী মেয়েদের প্রাইমারি রেনড হয়ে থাকে। সঙ্গে যদি অস্থিসন্ধির ব্যথা ও অন্যান্য উপসর্গ থাকে, সেটাকে বলে সেকেন্ডারি রেনড। এই সিনড্রোম যাঁদের থাকে, তাঁদের ক্যাফিন খাওয়া বন্ধ করতে হবে। হাত মোজা, পা মোজা ব্যবহারের পাশাপাশি ওষুধের ব্যাপারে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

বিটা ব্লকার ওষুধের পরিবর্তে ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার ভালো হবে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে কখনো এটা করতে যাবেন না। আঙুলের রং যদি নীল থেকে কালো বর্ণ ধারণ করে, সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে একসময় তা গ্যাংগ্রিনে রূপ নিতে পারে।

ইনজেকশন ইপোপ্রস্টেনল, হেপারিন, ইনফেকশন প্রতিরোধ ও আরও যা চিকিৎসা আছে, অতি দ্রুত শুরু করতে হবে। দেরি হয়ে গেলে গ্যাংগ্রিন হয়ে যাওয়া আঙুল অপসারণ করতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *