শুভ নববর্ষ : মঙ্গল কর বিকশিত কর অন্তর মম

শুভ নববর্ষ : মঙ্গল কর বিকশিত কর অন্তর মম

শুভ নববর্ষ : মঙ্গল কর বিকশিত কর অন্তর মম

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : প্রতিটি উৎসব পালনের একটা নিজস্ব প্রথা আছে। হয়তো দিনকালের নিরিখে তা বদলেও যায়। আজকের দিনে শিক্ষিত মানুষ তার পারিপার্শ্বিকের অনেক অনেক কিছু জেনে ফেলে নিমেষেই। কিন্তু এই অনেক কিছু জেনে ফেলেও নিজের থেকে ক্রমশ দূরে, আরও দূরেই সরে গেছে। যে হয়তো বাইরের পৃথিবীকে আপন করেছে, কাছেও টেনেছে, অথচ নির্মম ভাবে নিজের মধ্যে যে পৃথিবীটুকু ছিল তা থেকে হারিয়ে যেতে যেতে দুস্তর ব্যবধানের ছোট্ট ছোট্ট দ্বীপের মতো একাকী হয়ে উঠেছে অনবধানে। এখন তো যোজন দূরের বার্তা সে শুনতে পায় নিজের ইচ্ছেমতন চাবি টিপে। নতুন স্বপ্ন ও নতুন আশা নিয়ে এল একটি নতুন বছর: ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ। অর্জন-ব্যর্থতা, সুখ-দুঃখ সবকিছু নিয়ে ইতিহাসের গর্ভে চলে গেল ২০২০। মহামারী করোনায় বিষাক্ত করে তুলেছিল মানবজীবন। আমরা বেঁচে আছি, সুন্দর আছি। নতুনবর্ষে ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, আরও নতুন নতুন সাফল্যময় অর্জনের প্রয়াসী হওয়ার সংকল্প নিয়ে নতুন বছর শুরু করার এই মুহূর্তে আমরা আমাদের পাঠক, লেখক, শুভানুধ্যায়ী সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। শুভ নববর্ষ ২০২১।

করোনা স্বত্ত্বেও অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, কিন্তু বিনিয়োগ আগের মতোই থেমে আছে। তাই চলমান প্রবৃদ্ধির ধারা কতটা টেকসই হতে পারে, এমন প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ তুলেছেন। বছরজুড়েই স্বাস্থ্য খাতের নানা কেলেঙ্কারি আলোচনায় থাকলেও এর হোতাদের চিহ্নিত বা শাস্তির আওতায় আনার ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য আছে। তবে এখনো সুনিশ্চিত কোনো বিচার হয়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি ঘটেছে: নারী ও শিশুদের প্রতি নৃশংসতার বেশ কিছু ঘটনায় জাতি স্তম্ভিত হয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন প্রতিহত করতে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো দুঃখজনক ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।

২০২০ সালে যে সুবিধা মিলেছে, তার প্রকৃত অবস্থা কী হয়, তা বোঝা যাবে আগামী বছর। ২০২১ সাল হবে গ্রাহকদের থেকে টাকা আদায়ের বছর। গ্রাহকেরা কেমন টাকা ফেরত দিতে পারেন, এটার ওপর নির্ভর করবে ব্যাংক খাত কোথায় যাবে। নতুন বছরে নতুন বিনিয়োগও হবে। যখন কোনো সমস্যা হয়, এরপর বিনিয়োগ বেড়ে যায়। নতুন বছরে অনেক দেশ থেকে বিনিয়োগ আমাদের দেশে চলে আসবে। কারণ, আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অনেক দেশের থেকে বেশি। এ ছাড়া অনেক অর্থনৈতিক অঞ্চলও হচ্ছে। এর ফলে নতুন বছরে সমৃদ্ধিরও হাতছানি রয়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। এতে ব্যাংকগুলোও ভালো ব্যবসা করতে পারবে।

করোনার কারণে ব্যাংকিং সেবা ও ব্যবসা কীভাবে হবে, এটা আমরা বুঝে গেছি। তাই চলতি বছরে করোনার প্রকট যা–ই হোক না কেন, আমরা সেবা অব্যাহত রাখতে পারব। ব্যাংকগুলো এখন বিকল্প পন্থায় সেবায় মনোযোগ দিয়েছে। তাই গ্রাহকেরা কোনোভাবেই সেবা বঞ্চিত থাকবেন না।

ধর্মীয় উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলো কয়েক বছর ধরে যে বিচ্ছিন্নভাবে গুপ্তহত্যা চালিয়ে আসছিল তা গত বছর অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে সাফল্য। আমরা আশা করব, সরকার এ ব্যাপারে সতর্ক নজরদারি অব্যাহত রাখার পাশাপাশি জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় সামাজিক আন্দোলন ও অন্যান্য কার্যক্রমে জোর দেবে। জাতীয় জীবনের মূলধারায় রাজনৈতিক পরিবেশের প্রভাব গভীর। সেই পরিবেশে যে স্থবিরতা বিরাজ করছে, নতুন বছরে তা কাটানোর জন্য সব পক্ষ আন্তরিক হবে বলেই প্রত্যাশা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *