শেখ হাসিনা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশের পথ দেখাচ্ছেন : শিক্ষামন্ত্রী

শেখ হাসিনা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশের পথ দেখাচ্ছেন : শিক্ষামন্ত্রী

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়েছেন। এখন আরো উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের পথ দেখাচ্ছেন। তিনি প্রশ্ন করেন, তাহলে আমাদের নৌকার বিকল্প কোথায়। দেশকে ও মানুষকে ভালোবাসা যদি আমার দেশপ্রেম হয়, দেশকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা যদি দেশ প্রেম হয়, দেশের মানুষের সুখ, শান্তি, উন্নতি সেটা চাওয়া যদি আমার দেশ প্রেম হয়, তাহলে আমি বলতে বাধ্য শেখ হাসিনাকে অর্থাৎ নৌকাকে ভোট দেওয়াটাও দেশ প্রেমেরই অংশ। কারণ এর উল্টো দিকের বিকল্প অর্থ হচ্ছে দেশ ধ্বংস, মানুষ পোড়ানো, দেশের সম্পদ বিনষ্ট করা এবং এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করা।

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে চাঁদপুর প্রেস ক্লাবের ২০২৩ সালের কার্যকরি কমিটির অভিষেক ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

মন্ত্রী আরো বলেন, কয়েক মাস আগে বলা হয়েছিল আমাদের সমস্ত বই থেকে ইসলাম ও রাসূল (স.) সম্পর্কে বিষয়গুলো ফেলে দেওয়া হয়েছে এবং সনাতন ধর্ম সম্পর্কিত সবকিছু নিয়ে আসা হয়েছে। এরপর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল, আমরা সেটির বিপরীতে আরেকটি ভিডিও করে উত্তর দিয়েছি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এখন যারা সরকারকে উৎখাত করতে চায় কিন্তু কোনো সুযোগ দেখছে না। কাজেই তারা এখন নানা ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এখন তারা নতুন শিক্ষক্রমের পেছনেও লেগেছে। কারণ এই শিক্ষাক্রম অনুযায়ী আমার শিক্ষার্থী মানবিক, অসাম্প্রদায়িক, নৈতিকতা সম্পন্ন এবং সোনার বাংলা গড়ার সোনার মানুষ হবে। তাই তাদের এই বাংলাদেশকে যে পাকিস্তান বানানোর অপচেষ্টা। কারণ তাদের অপচেষ্টা নস্যাৎ হয়ে যাবে, এটা তাদের ভয়। তাই এই শিক্ষাক্রমের বিরোধীতা করছে তারা।

ডা. দীপু মনি বলেন, তারা (বিএনপি) সব সময় ইসলামের নামকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করে। আমি বলব আমরা যেন ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশলী হই এবং কেউ যেন ধর্মকে অপব্যবহার না করে। সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখব এবং যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহার করে অপকর্ম করবে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব।

মন্ত্রী বলেন, আমরা শুধুমাত্র প্রাথমিক নয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক, কারিগরি, মাদরাসা ও উচ্চ শিক্ষায় ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসছি। মাদরাসা শিক্ষায় বিষয়ের মানের বিষয় হচ্ছে। যেখানে ১ হাজারের বেশি হয়। সেটাকে এক হাজার নম্বরের মধ্যে নিয়ে আসার জন্য আমরা বিবেচনায় এনেছি। তাদের ধর্ম সংক্রান্ত বিষয়গুলো ঠিক রেখে অন্য যে বিষয় পড়ানো হয় সেগুলোকে বিন্যাস করা হবে।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, চাঁদপুর প্রেস ক্লাব হচ্ছে আমার নিজের একটি প্রতিষ্ঠান। আমি এই ক্লাবের একজন সদস্য। এখানে আমি নিমন্ত্রণ না করলেও আসি। কারণ আমার পিতা ছিলেন সংবাদপত্রের লোক। এই পেশা আমাদের পরিবারে সঙ্গে জড়িত। তাই আমি বলব, আমরা যেন সংবাদপত্রে প্রথম পাতায় ইতিবাচক সংবাদগুলো নিয়ে আসি। কারণ এখন পত্রিকার প্রথম পাতায় নেতিবাচক সংবাদগুলো দেখি। ইতিবাচক সংবাদ পত্রিকার এক কোনায় পাওয়া যায়। পত্রিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে। কারণ পত্রিকা দেখে এবং পড়ে অনেকেই শিখেন।

চাঁদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, সাংবাদিকতায় চাঁদপুরের বর্ণাঢ্য ঐতিহ্য রয়েছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের আগের দুজন সভাপতির বাড়ি চাঁদপুরে। আমি ২৪ বছর দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় কাজ করছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও এই পত্রিকা কাজ করেছেন। আমাদের শিক্ষামন্ত্রীর পিতাও এই পত্রিকায় কাজ করেছেন। সাংবাদিকতা পেশা হচ্ছে মানুষের জন্য এবং মানুষের জন্য কাজ করার পেশা। সাংবাদিকদের মানুষের কাছে প্রতিজ্ঞা রয়েছে। এই পেশায় আমাদেরকে দায়িত্বশীলতা নিয়ে কাজ করতে হবে। এর জন্য আমাদের প্রথম দায়িত্ব হবে সততা ও অঙ্গীকার।

তিনি বলেন, এটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বছর হিসেবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন বিশ্বের কাছে বিস্ময়। আমি একজন নারী হিসেবে কিভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছি, সেটি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহস থেকে সাহস নিয়ে। এভাবে আরো যারা নারী আছেন তাদের কাছ থেকে সাহস নিয়ে। সংক্ষিপ্তভাবে সফলতা অর্জন করা যায় না। এর জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়। যেসব নারীরা সাংবাদিকতা কিংবা অন্য পেশায় আসতে চান, তাদের ইচ্ছা শক্তিটাই হচ্ছে বড়। আমরা দেশের সকল প্রেস ক্লাবকে এক ছাতার নিচে এনে কাজ করে এগিয়ে যেতে চাই।

সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, ঢাকা থেকে প্রতিদিন ৮১৭টি দৈনিক পত্রিকা বের হয়। এর পাঠক হচ্ছে ২০ লাখ। কিন্তু বাংলাদেশে বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হচ্ছে ১৪ কোটি। অর্থাৎ পত্রিকা হিসেবে পাঠক সংখ্যা কম। আর মানুষ এখন টেলিভিশনও দেখছে না। এর কারণ হচ্ছে ডিজিটাল বিপ্লব। ঠিক এই সময়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা কি হবে, তা আমাদের ঠিক করতে হবে।

তিনি বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচন কঠিন হোক আর সহজ হোক, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষকেই জিততে হবে। কারণ মুক্তিযুদ্ধের মার্কা হচ্ছে নৌকা। এদেশের মাটিতে মুক্তিযোদ্ধাদের রক্ত মিশে আছে। আমরা এর বিকল্প কিছু দেখছি না। আওয়ামী লীগ ভালো কাজ করলে প্রশংসা করব, আর জনগণের পক্ষে নয়, সেসব কাজের সমালোচনা করব। কারণ বঙ্গবন্ধুই বলেছিলেন, নীতিহীন সাংবাদিকতা দেশের কল্যাণ হতে পারে না। সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে আপনাকে যেকোনো নীতির মধ্যে আসতে হবে।

চাঁদপুর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আল-ইমরান শোভনের সঞ্চালনায় সংবর্ধিত অতিথিদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন সিআইপি জয়নাল আবেদিন মজুমদার।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, চাঁদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওচমান গণি পাটওয়ারী, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, জেলা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি আলহাজ মো. ইউসুফ গাজী, ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু, সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী।

প্রেস ক্লাব সদস্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, জালাল চৌধুরী, শহীদ পাটওয়ারী, শরীফ চৌধুরী, গিয়াস উদ্দিন মিলন, প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌস প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে শিক্ষামন্ত্রী ও জাতীয় প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ চাঁদপুর প্রেস ক্লাবের নতুন কমিটির সদস্যদের ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে বরণ করে নেন।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *