পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: ২০২৩ সালে সরকারি হিসাবেই সারা দেশে পাঁচ হাজার ৪৯৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ হাজার ২৪ জন প্রাণ হারিয়েছে। এই হিসাবে দিনে গড়ে প্রায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে আরো অন্তত সাত হাজার ৪৯৫ জন। হিসাবটি সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ)।
রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত বিআরটিএ ভবনে গতকাল মঙ্গলবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার।
বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের সড়ক দুর্ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যানের মধ্যে এক হাজার ৭৪৭টি ছিল মোটরসাইকেল। এ সংখ্যা মোট যানের ২২.২৯ শতাংশ। এ ছাড়া দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হওয়া অন্যান্য যানের মধ্যে ছিল বাস ও মিনিবাস এক হাজার ৮৩টি, মোটরকার ও জিপ ১০৬টি, ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান এক হাজার ৩৮৯টি, পিকআপ ৩৭০টি, মাইক্রোবাস ২২৬টি, অ্যাম্বুল্যান্স ১৬১টি, ভ্যান ২৩০টি, ট্রাক্টর ১২৮টি, ইজি বাইক ২১৭টি, ব্যাটারিচালিত রিকশা ৪১৫টি, অটোরিকশা ৪৯৭টি এবং অন্যান্য যান এক হাজার ১৬৮টি।
দুর্ঘটনাসংক্রান্ত মাসভিত্তিক তথ্য বলছে, জানুয়ারিতে ৩২২ দুর্ঘটনায় নিহত ৩৩৩ জন ও আহত ৩৩৬ জন; ফেব্রুয়ারিতে ৩০৮ দুর্ঘটনায় নিহত ৩০৩ ও আহত ৪১৬ জন; মার্চে ৩৮৭ দুর্ঘটনায় নিহত ৪১৫ ও আহত ৬৮৮; এপ্রিলে ৪৭৬ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৫৯ ও আহত ৭০৫ জন; মে মাসে ৪৮৩ দুর্ঘটনায় নিহত ৩৯৪ ও আহত ৬৪৯ জন; জুনে ৫৬২ দুর্ঘটনায় নিহত ৫০৪ ও আহত ৭৮৫ জন। এ ছাড়া জুলাইতে ৫৬৬ দুর্ঘটনায় ৫৩৩ জন নিহত ও ৯৩৪ জন আহত; আগস্টে ৪৫৮ দুর্ঘটনায় ৩৭৬ নিহত ও ৬৯৫ জন আহত; সেপ্টেম্বরে ৪৫৪ দুর্ঘটনায় ৪১০ জন নিহত ও ৬০৯ জন আহত; অক্টোবর মাসে ৪৩৭ দুর্ঘটনায় ৩৯৪ জন নিহত ও ৪৯২ জন আহত; নভেম্বর মাসে ৫৫৯ দুর্ঘটনায় ৪৭০ জন নিহত ও ৫৮১ জন আহত এবং ডিসেম্বর মাসে ৪৮৩ দুর্ঘটনায় ৪৩৩ জন নিহত ও ৬৪১ জন আহত হয়েছে।
২০২৩ সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে করা বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনের তথ্যে কিছু ভিন্নতা রয়েছে। বিআরটিএর প্রতিবেদনে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার দুর্ঘটনায় পাঁচ হাজার ২৪ জন নিহতের তথ্যের পাশাপাশি পুলিশের প্রতিবেদনে পাঁচ হাজার ৯৩টি দুর্ঘটনায় চার হাজার ৪৭৫ জন, রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে ছয় হাজার ৯১১টি দুর্ঘটনায় ছয় হাজার ৫২৪ জন এবং বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদনে ছয় হাজার ২৬১টি সড়ক দুর্ঘটনায় সাত হাজার ৯০২ জন নিহত হওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তথ্যের পার্থক্য প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, সরকারি ও অন্যান্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন অতিরঞ্জিত। বিআরটিএর তথ্য নিয়মিতভাবে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। এর বাইরে অন্য কোনো তথ্য পাওয়া গেলে বা কোনো অসংগতি থাকলে তা বিআরটিএকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু যাত্রী কল্যাণ সমিতিসহ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার প্রকাশিত তথ্যের সঙ্গে বিআরটিএর তথ্যের অমিল থাকা সত্ত্বেও তারা কিছু অবহিত করেনি।