সন্তানের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সচেতন থাকবেন যেভাবে

সন্তানের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সচেতন থাকবেন যেভাবে

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসতে দেশে দীর্ঘ দেড় বছরেরও বেশি সময় পর খুললো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে স্কুল-কলেজে ফিরতে শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু অভিভাবকদের মাঝে কাজ করছে শঙ্কা, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা। কারণ কোভিড তো হাওয়ায় মিলিয়ে যায়নি। খানিকটা অসাবধান হলেই আছে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি। পাশপাশি অন্যান্য বয়সীদের মত শিশুদেরও ভর করেছে কোভিড ফোবিয়া। এমন পরিস্থিতিতে কী করবেন, জেন নিন তেমন কিছু বিষয়।

সন্তানকে আশ্বস্ত করুন : প্রথমত, আপনার আদরের সোনামনিকে আশ্বস্ত করুন, কোভিড নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তার কিছু নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলে গেলে ও ক্লাস করলে সংক্রমণের ভয় নেই। স্কুলে থাকাকালীন সময়টাতে মাস্ক পরলে ও সহপাঠী-শিক্ষক থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকলে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক কম থাকে। পাশপাশি মনে করে দিন, নিয়মিত সাবান পানিতে হাত ধোয়া ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ করার গুরুত্বের কথা। তাদেরকে আরো বুঝাতে হবে অনলাইন ক্লাস থেকে স্কুলে গিয়ে ক্লাস করলে অনেক বেশি জানতে ও বুঝতে পারবে। এছাড়া দীর্ঘসময় পর সহপাঠী ও শিক্ষকদের সাথে দেখা হলে ভালো লাগবে, মনও খুশি হবে।

মানিসক পরিবর্তনে নজর রাখুন : অতিমারীতে সবরাই জীবনযাপনে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। এর বাইরে যেমন আপনি নন, তেমনি আপনার সন্তানও নয়। তাই আপনার সন্তান স্কুল যেতে শুরু করলে তার স্বাস্থ্য, পড়াশোনা, মানসিক স্বাস্থ্য, আচার-আচরণের প্রতি বিশেষ নজর রাখুন। খেয়াল করবেন, স্কুল থেকে ফেরার পর সে যেনো মনমরা হয়ে না থাকে। কোনো বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত না হয়। তার মাঝে কোনো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আছে কিনা, হুটহাট রেগে যাওয়া কিংবা খেলায় অনীহা বা হোমওয়ার্ক করতে অনীহা হচ্ছে কিনা- এসব বিষয়ে লক্ষ্য রাখুন। যদি এমন পরিস্থিতি িতির হয়, তাহলে ধৈর্য ধরে সন্তানের পাশে থাকুন। ইতিবাচক কিছু শোনান। বুঝাতে চেষ্টা করুন, নিজের সুরক্ষার কথা ভেবে সবারই নিরাপদ দূরত্বে থাকা উচিত।

ঘুমের অভ্যাসে পরিবর্তন আনুন : দেড় বছরেরও বেশি সময়ে লাগাতার লকডাউন ও অনলাইন পড়াশোনার ফলে সন্তানের ঘুমের অভ্যাসে বদল হওয়াটি ছিল খুব স্বাভাবিক। এর ফলে স্কুল-কলেজের নিয়মিত রুটিনে ফিরতে সমস্যা হতে পারে।বিশেষ করে রাতে দেরিতে ঘুমানোর প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। আগে স্কুল চলাকালীন ঘুমের অভ্যাস যেমন ছিল তাতে ফিরে যেতে হবে এবং মনে রাখতে হবে, আপনার সন্তান যদি পর্যাপ্ত না ঘুমায়, তাহলে ক্লাসে সহজেই দুর্বল হয়ে পড়বে এবং পড়াশোনাতে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারবে না। এক্ষেত্রে বেশিক্ষণ টিভি দেখা, স্মার্টফোন ও অন্যান্য স্ক্রিন জাতীয় ডিভাইস ব্যবহার থেকে তাদের বিরত রাখুন।

সবসময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে : অধিকাংশ শিশুরাই স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে বড়দের মতো সচেতন নয়। তাই তাদের বিষয়গুলো বুঝিয়ে বলতে হবে। প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার পর নিয়মিত সাবান পানিতে হাত ধোয়ার কথা যেনো তারা না ভুলে যায়। পাশপাশি বন্ধুদেরকেও নিয়মিত হাত ধুতে মনে করিয়ে দিতে হবে।

শিশুকে কাশি-হাঁচির শিষ্টাচারও মেনে চলতে বলুন। অর্থাৎ কাশি বা হাঁচি আসলে কনুইর ভাঁজ ব্যবহার করতে হবে। সবসময় মাস্ক পরতে বলুন। দূরত্ব বজায় রেখে অন্যের সাথে কথা বলতে বলুন। স্কুলের বাইরে থেকে ঝালমুড়ি, ফুচকা কিংবা ফাস্ট ফুড জাতীয় কিছু যাতে কিনে না খায়, সে বিষয়ে সচেতন করুন। শিশুর ব্যাগে আলাদা মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে দিন। পানির বোতল অনেক ক্ষেত্রেই শিশুরা ভাগাভাগি করে খেয়ে থাকে। একজনের পানির বোতল আরেকজন যেনো শেয়ার না করে সে বিষয়টি বলে রাখুন।

পেন্সিল, কলম কিংবা লেখার খাতা থেকে শুরু করে বইয়ের ক্ষেত্রেও বন্ধুর সঙ্গে ভাগাভাগি না করার বিষয়টি বুঝাতে চেষ্টা করুন। এতে করে শিশু একদিকে যেমন সচেতন হবে, আবার বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে যাতে বন্ধুরা মন খারাপ না করে তার দিকেও লক্ষ্য রাখতে পারবে। শিশু স্কুল থেকে ফিরলে গোসল করাবেন। এতে সে জীবাণুমুক্ত হবে। খাদ্যতালিকায় যথাসম্ভব পুষ্টিকর খাবার রাখুন এবং বিশ্রামে থাকতে দিন।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *