সন্ধ্যায় গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধে আইসিজের সিদ্ধান্ত

সন্ধ্যায় গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধে আইসিজের সিদ্ধান্ত

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ফিলিস্তিনের গাজায় সামরিক হামলায় নির্বিচার হত্যাকাণ্ডে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আদেশ দেওয়া হবে কিনা, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) শুক্রবার সে সিদ্ধান্ত দেবেন। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এ আইনি সংস্থা। আপিল ছাড়াই আইসিজের এর সিদ্ধান্ত মেনে চলার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে তা মানার জন্য কোনো দেশের ওপর শক্তি খাটাতে পারেন না এ আদালত। এটি অস্থায়ী ব্যবস্থার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার আটটি অনুরোধের কিছু বা সব মঞ্জুর করলেও ইসরায়েল তা মেনে চলবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের বিপক্ষে গেলে ভীষণ চাপে পড়বে ইহুদিবাদী দেশটি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের মর্যাদা আরও ভূলুণ্ঠিত হবে।

দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী নালেডি পান্ডর নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত আইসিজেতে উপস্থিত থাকবেন। ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালিয়েছে কিনা, সে প্রশ্নের সুরাহা আজ করবেন না বিশ্ব আদালত হিসেবে খ্যাত আইসিজে। শুধু জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে।

দক্ষিণ আফ্রিকা গত ডিসেম্বরে আইসিজেতে মামলাটি করে। চলতি মাসের শুরুর দিকে আইসিজেতে দুই দিনের শুনানি হয়। মামলার চূড়ান্ত রায় পেতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। শুনানিতে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়, আদালত যেন জরুরি ভিত্তিতে ইসরায়েলকে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দেন। জেনোসাইড কনভেনশনের আওতায় ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আইসিজের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ ঘোষণা করা জরুরি বলেও উল্লেখ করা হয়।

গাজা উপত্যকাটিতে ইসরায়েলের হামলায় গত ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২৬ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।দক্ষিণ আফ্রিকা আইসিজের কাছে ৯টি আর্জি জানিয়েছে। গাজায় সব ধরনের সামরিক কার্যক্রম বন্ধের পাশাপাশি গাজায় মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ স্বাভাবিক রাখতে ইসরায়েলকে নির্দেশ দেওয়ারও অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ইসরায়েল প্রায়ই আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল ও জাতিসংঘের তদন্ত বর্জন করে থাকে। তাদের দাবি, এগুলো পক্ষপাতদুষ্ট। তবে চলতি মাসের শুরুতে আইসিজেতে অনুষ্ঠিত দুই দিনের শুনানিতে দেশটি একটি উচ্চ পর্যায়ের আইনি দল পাঠায়।

গাজায় হামলা বন্ধ করার যে কোনো আদেশ ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক অবস্থানের জন্য একটি বড় আঘাত। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ মামলার বিষয়ে নীরব থাকলেও ইসরায়েল তার এক নম্বর সমর্থক এবং অস্ত্র সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পাচ্ছে। তা সত্ত্বেও ইসরায়েল ভীষণ চাপে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আদালতের সিদ্ধান্ত কিছুটা নমনীয় হলেও দেশটির বিপক্ষে যাবে।

চাপে পড়ে ইসরায়েল সরকার ও সামরিক নেতাদের প্রণীত ৩০টির বেশি গোপন আদেশ প্রকাশ করেছে তেল আবিব। এতে দেখানো হয়, গাজায় ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যু কমানোর জন্য ইসরায়েল প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ইসরায়েলি নেতাদের উত্তেজক বিবৃতির ওপর নির্ভর করে বলেছে, এতে গণহত্যার অভিপ্রায়ের প্রমাণ মিলেছে। তবে ইসরায়েল গোপন নথি প্রকাশ করে দেখানোর চেষ্টা করেছে, রাজনীতিবিদরা জনসমক্ষে যা কিছু বলেছেন তা ইসরায়েলের যুদ্ধ মন্ত্রিসভা এবং তার সামরিক বাহিনীর হাইকমান্ডের নির্বাহী সিদ্ধান্তে বাতিল করা হয়েছে। গাজা নিয়ে আইসিজের রুলিং আদেশ পেতে তিন থেকে চার বছর লেগে যেতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *