পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, রক্তে কেনা পঞ্চাশ বছরের বাংলাদেশ আজ ভালো নেই। দেশের মানুষ আজ ভোটচোর সরকার, দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী, আমলা ও অসৎ ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ আর সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করতে হলে সরকার ও ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট রুখতে হবে।
শুক্রবার (১৩ মে) বিকেলে রংপুর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রংপুর বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সরকার দলীয় মধ্যস্বত্বভোগী ও চাঁদাবাজদের দৌরাত্মে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ দেশে উৎপাদিত পণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, দেশে উৎপাদিত পণ্যের পাশাপাশি আমদানিকৃত পণ্যের দাম বাড়ছে অসৎ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে। প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ম্যানেজ হয়ে জালিয়াতকারীদের নিরাপত্তা দিচ্ছে। মন্ত্রীর মতলববাজি বিশ্বাসে বাজার থেকে পণ্য উধাও হয়ে যায়। এই দুষ্টচক্রের কবলে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ অবস্থা তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, নাগরিকদের অন্ন, বস্ত্র, নিরাপত্তা, শিক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য দেশে বৈধ সরকার দরকার। কিন্তু বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় চেপে বসে আসে। ভোটবিহীন নির্বাচন করে তারা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে লুটপাট চালাচ্ছে। শুধু তাই নয়, অশুভ চিন্তায় সরকার মদের লাইসেন্স দেওয়ার আড়ালে মাদককে সহজলভ্য করেছে। শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামকে ক্রমান্বয়ে সরিয়ে দিচ্ছে।
ফয়জুল করীম বলেন, দেশের মানুষ যখন সরকারদলীয় এমপি-মন্ত্রীসহ তাদের আত্মীয় স্বজনদের কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির খবরে অতিষ্ট, ঠিক তখনই এরা আলেম-উলামাদের আর্থিক লেনদেন নিয়ে হাউকাউ শুরু করেছে। জাতি এই ধান্ধাবাজ অশুভ গোষ্ঠীকে চেনে। কারা এদেরকে অর্থায়ন করে, তাদের মতলব কী তা মানুষ জানে। এরা দুর্নীতির দোসর, লুটপাটের দোসর। এরা মানুষের ভাত-ভোটের অধিকার হরণকারীদের ছা-পোষা বুদ্ধিজীবী। সামগ্রিকভাবে এই সরকার ও তাদের দেশি-বিদেশি দোসররা বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থবিরোধী বহুমাত্রিক চক্রান্ত করে যাচ্ছে।
দলের যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. আক্কাস আলী সরকার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আমিরুজ্জামান পিয়াল, যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল প্রকৌশলী আতিকুর রহমান মুজাহিদ, ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি শেখ মুহাম্মদ আল-আমিন।
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন রংপুর জেলার সেক্রেটারি মাহামুদুর রহমান ও নগরের জয়েন্ট সেক্রেটারি জয়নুল আবেদীন। সমাবেশে রংপুর বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
সমাবেশ শুরুর আগে বৈরী আবহাওয়ার কারণে পূর্ব নির্ধারিত কালেক্টর ঈদগাহ ময়দানের পরিবর্তে রংপুর জেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টারে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নিতে সকাল থেকেই বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা জড়ো হতে থাকেন। বাদ জুমা সমাবেশ শুরু হয়।