সালাফের রমযান।। পর্ব-১

সালাফের রমযান।। পর্ব-১

  • আব্দুস সালাম ইবন হাশিম

সালাফের কাছে রমযান ছিলো পরম আরাধ্যের মাস। বসন্তে যেমন ফুলে ফুলে রাঙিয়ে উঠে বাগিচা, নয়া পত্রপল্লবে হরিত হয়ে ওঠে পৃথিবী ঠিক রমযান এলেও মহান সালাফগণ শোভিত হতেন ইবাদত বন্দেগীতে, রাঙিয়ে উঠতেন আল্লাহ ও লিল্লাহিওয়াতের রঙে। কিয়ামুল লাইল, সিয়ামুন নাহার, তিলাওয়াতুল কুরআন, আযকার, আদঈয়া, ইনাবাত ইলাল্লাহের এক স্বর্গীয় বাসন্তী জীবনে তারা বিলোল হতেন একটি মাসের জন্য। এই সিলসিলায় প্রথমেই জানা যাক কুরআনের সাথে কেমন কাটতো তাঁদের রমযান। কতটা বিভোর হতেন কুর’আনের তিলাওয়াতে।

আরও পড়ুন- রমযানকে স্বাগত জানাই সাহাবাদের আমলে

কুরআনে বিভোর রমযান   

কুরআনের সাথে মাহে রমযানের রয়েছে এক পরম সখ্যতা। কুরআন নাযিলের কাল হওয়ায় যাবতীয় কুরআনী পুন্যে পরিস্নাত এই মাস। তাই রাসূল সা., সাহাবায়ে কেরাম রা. থেকে নিয়ে সালাফ, খালাফ পর্যন্ত সবাই এই মাসকে কুরআনময় করে তুলতেন। হযরত উসমান রা. রমযানের প্রতিদিন এক খতম করে কুরআন পাঠ করতেন। কুফার প্রখ্যাত ক্বারী তাবেঈ আসওয়াদ ইবনে ইয়াযিদ রমযানে প্রতি দুই রাতে একবার কুরআন খতম করতেন আর রমযানের বাইরে প্রতি ছয় রাতে একবার কুরআন খতম করতেন। প্রসিদ্ধ তাবেঈ সাঈদ ইবনু জুবাইর রা.ও রমযানে প্রতি দু’রাতে একবার কুরআন শেষ করতেন। ইমাম বুখারী রা. এর ব্যাপারে জানা যায় তিনি রমযানে প্রতিদিন এক খতম করতেন।

ইমাম বুখারী রা. এর ব্যাপারে জানা যায় তিনি রমযানে প্রতিদিন একবার করে কুরআন খতম করতেন।

ইমাম শাফেঈ রা. রমযান মাসে কেবল নামাযের বাইরেই ৬০ বার কুরআন খতম করতেন। বিদগ্ধ মুহাদ্দিস ইমাম কতাদাহ স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি সাত দিনে একবার খতম করতেন, রমযানে তিন দিনে একবার খতম করতেন, আর রমযানের শেষ দশকে প্রতি রাতে একবার খতম করতেন। রমযান এলে ইমাম যুহরী হাদীস চর্চা ও ইলমের হালকাকে ক্ষান্ত দিয়ে কুরআনে তন্নতন্ন হতেন।

এভাবেই প্রিয় সালাফ রমযানকে করে তুলতেন কুরআনময়। আর কুরআনকে বানিয়ে নিতেন রমযানের সার্বক্ষণিক সঙ্গী এ যেনো রাসূলে আকরাম সা. এরই যাপিত সুন্নাহর দৃপ্ত অনুসরণ।

রমযান এলে তিনি রবের ইবাদত বন্দেগীর পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি করতেন। জিব্রাইল (আঃ) তাঁর সাথে তিনি পালা বদল করে কুরআন অধ্যয়ন করতেন।

ইবনুল কাইয়্যিম বলেন,  ‘রাসূল সা. এর অন্যতম সুন্নাহ হলো, রমজান এলে তিনি রবের ইবাদত বন্দেগীর পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি করতেন। জিব্রাইল (আঃ) তাঁর সাথে তিনি পালা বদল করে কুরআন অধ্যয়ন করতেন।

প্রিয় পাঠক, চলুন পোক্ত ইরাদা করি, এই রমযানে যেন অন্তত তিনটি খতম আমরা দিতে পারি। ইরাদা আমাদের আর পূর্ণতা দিবেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন।

 

লেখক, পরিচালক- ইমাম শাইবানী ফিকহ একাডেমী

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *