শায়খুল হাদিস যাকারিয়া রহ. : হযরত শায়খুল ইসলাম মাদানী রহ. তারবীহর নামাজ আদায় করতেন আব্দুস সাত্তার সাহেবের বাসগৃহে আর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন নয়া সড়ক বড় মসজিদে যা হজরতের বাড়ি থেকে দুই মাইলের মত দূরে অবস্থিত। আর এখানেই দূর দুরান্ত থেকে মানুষ তার সাথে সাক্ষাৎ করতে আসত। যেহেতু এখানে মাদানী রহ. পুরো রমজান অতিবাহিত করতেন তাই তিনি একামতের নিয়ত করে নিতেন এবং সব নামাজের ইমামত তিনি নিজেই করতেন। যোহরের নামাজের পর জায়নামাজের চারপাশে রাখা পানির বোতলে দম দিতেন তারপর জায়নামাজের নিচ থেকে চিঠি-পত্র বের করতেন যা সেইদিন যোহর পর্যন্ত জমা হয়েছে। তারপর এক এক করে আবেদনপত্রগুলো পড়তেন ও তার আবেদনকারীকে ডেকে তার আবেদন পুরা করতেন, কাউকে তাবিজ দিতেন আর যে সব পত্রে বাইয়াতের আবেদন থাকত তাদের মসজিদের এক কোনায় একত্র করতেন ।
ইফতার শুধু খেজুর ও জমজমের পানি দিয়ে করে এক-আধ টুকরা কোন ফল খেয়ে নারিকেলের পানি পান করতেন। মাগরিবের নামাজ সংক্ষিপ্ত সময়ে আদায় করে দুই রাকাত নফল নামাজ দীর্ঘ সময় ধরে আদায় করতেন যা প্রায় আধাঘণ্টার মত লাগত।
অন্যান্য পত্র পড়া শেষ করে তারপর তাদের বাইয়াত করতেন। তারপর কখনো তিনি একটু বিশ্রাম নিতেন নতুবা তেলাওয়াতে মশগুল হয়ে পড়তেন। আর এই রমজানেই বিশেষ সাক্ষাতপর্ব তো চালু ছিলই । এভাবেই আসরের আজান দিয়ে দিত তারপর তিনি আসরের নামাজ আদায় করে হজরত মাওলানা মুহাম্মাদ জলিল সাহেব যিনি দারুল উলুম দেওবন্দের শিক্ষক ছিলেন তার সাথে সোয়া এক পারা কুরআনের দাওর করতেন। যদি দাওর ইফতারের আগেই শেষ হয়ে যেত তাহলে তিনি মুরাকাবায় বসতেন আর সাথিরা জিকির ও দোয়ায় মশগুল থাকত । ইফতার শুধু খেজুর ও জমজমের পানি দিয়ে করে এক-আধ টুকরা কোন ফল খেয়ে নারিকেলের পানি পান করতেন। মাগরিবের নামাজ সংক্ষিপ্ত সময়ে আদায় করে দুই রাকাত নফল নামাজ দীর্ঘ সময় ধরে আদায় করতেন যা প্রায় আধাঘণ্টার মত লাগত। তারপর তিনি দীর্ঘ দোয়া করতেন যাতে মজলিসের অন্যান্য লোকেরা চাইলে শরিক হতো।
আবার একাকীও দোয়া করার সুযোগ ছিল। এরপর কোথাও দাওয়াত থাকলে সেখানে যেতেন নতুবা নিজের বাসগৃহে খাবার খেয়ে কয়েক মিনিট বিশ্রাম নিতেন। সিলেটে হযরত মাদানী এশা ও তারবীহর নামাজ নিজেই পড়াতেন। এ কারণে দূর দূরান্ত থেকে বহু লোক প্রতিদিন তারবীহতে শরিক হোত। এভাবেই সিলেটের পুণ্যভূমিতে শায়খুল আরব ওয়াল আজম সাইয়্যেদ হুসাইন আহমাদ মাদানী তার রমজান অতিবাহিত করতেন ।
ভাষান্তর : নাইমুল ইসলাম