৯ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ২৬শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ১৯শে জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : টানা বৃষ্টিপাত ও মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেট ও সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ধলাই ও পিয়াইন নদীর পানি কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করেছে। এতে বিশ্বম্ভরপুর-তাহিরপুর সড়কের শক্তিয়ারখলা সাব-মার্সিবল সড়ক ডুবে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
বৃষ্টিপাত পুরোপুরি না কমলে এ পরিস্থিতির উন্নতি হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সিলেট আবহাওয়া অফিস সোমবার (১৩ জুন) সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৭৪.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছ।
সিলেট আবহওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, আগামী ১০ দিনের আবহাওয়া পূর্বাভাসে সিলেটে প্রচুর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে ১৪-১৫ এবং ১৭-১৯ জুন ভারিবর্ষণ হতে পারে। অন্য দিনগুলোতে থেমে থেমে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এবং ২৩ জুন পর্যন্ত এ অবস্থা চলতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সোমবার সন্ধ্যা ৬টার বুলেটিনে জানানো হয়, সিলেটে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে, বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুসারে, সোমবার সকালে কোম্পানীগঞ্জ থানাবাজার পয়েন্টে ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার ১২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির আরও খারাপের দিকে যাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রায়হান পারভেজ রনি বলেন, আগের বন্যায় ফসলের যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গেছে। নতুন করে ৭ হেক্টরের মতো শাকসবজির ক্ষেত পানিতে ডুবেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) লুসিকান্ত হাজং জানান, টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আবারও বড় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।
সুনামগঞ্জ থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে সুরমা ও যাদুকাটা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমবার বিকেল ৩টায় সুরমা নদীর ষোলঘর পয়েন্টে বিপদ সীমার ১০ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল ৯টায় যাদুকাটা নদীর পানি লাউড়ের গড় পয়েন্টে বিপদ সীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ৭৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। একই সময়ে লাড়উড়ের গড়ে ১৯০ মিলিমিটার এবং ছাতকে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-২ মো. শামসুদ্দোহা জানান, সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ ষোলঘর পয়েন্টে ৭.৮০ সেন্টিমিটার এবং লাউড়ের গড়ে ৮.৫ সেন্টিমিটার অতিক্রম করলেই বিপৎসীমা অতিক্রম করা হয়।
তিনি আরও জানান, রবিবার ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ২৯৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়া সুনামগঞ্জে আরও বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বিশ্বম্ভরপুর-তাহিরপুর সড়কের শক্তিয়ারখলা সাব-মার্সিবল সড়ক ডুবে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। পাহাড়ি ঢলে বরাবরের মতো এই সড়কটি প্রথমে প্লাবিত হয়।
দোয়ারাবাজারের সাংবাদিক তাজুল ইসলাম জানান, গত দুই দিন বিরতির পর রবিবার সন্ধ্যা থেকে আবারও ভারি বর্ষণ ও মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।