সুপ্রিম কোর্টে অযোধ্যা মামলার শুনানি ৪ জানুয়ারি

সুপ্রিম কোর্টে অযোধ্যা মামলার শুনানি ৪ জানুয়ারি

পাথেয় রিপোর্ট : দেড়শ বছর ধরে ভারতের অযোধ্যায় অবস্থিত বাবরি মসজিদ হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক বিরোধ কেন্দ্র হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। মন্দির নাকি মসজিদ? সুপ্রিম কোর্টে অতি বিতর্কিত অযোধ্যা মামলার শুনানি হবে আগামী ৪ জানুয়ারি। যে বেঞ্চটি এই মামলা শুনবে, তার নেতৃত্বে থাকবেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি।

শাসক দল বিজেপি জানিয়েছে, তারা চায় সুপ্রিম কোর্ট এই মামলাটি প্রতিদিনই শুনে তাড়াতাড়ি তাদের রায় দিক রামমন্দির নিয়ে। বিজেপির পক্ষ থেকে আজ এ কথা জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর।

অন্যদিকে, একাধিক ডানপন্থী সংগঠনের দাবি, সরকার আইনি প্রক্রিয়াকে একপাশে সরিয়ে রেখে অবিলম্বে রামমন্দির নিয়ে অর্ডিন্যান্স জারি করুক, যাতে অযোধ্যায় মন্দির নির্মাণের কাজ খুব দ্রুত শুরু করা যেতে পারে।

২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট এই বিতর্কিত জমিটিকে তিনভাগে ভাগ করার নির্দেশ দিয়েছিল। যার মধ্যে একটি ভাগ পাবে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, একটি পাবে নির্মোহী আখড়া এবং শেষেরটি পাবে রাম লালা। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে ১৪’টি পিটিশন জমা পড়ে।

প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এবং বিচারপতি এস কে কল তিন বিচারপতির বেঞ্চের প্রতিনিধিত্ব করবেন।

এদিকে ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের অযোধ্যায় ১৬ শতকের তৈরি বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে রামমন্দির নির্মাণের দাবিতে নয়াদিল্লিতে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার হিন্দু ধর্মীয় নেতা ও সমর্থক। ২০১৯ সালে মে মাসে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের আগেই নতুন রাম মন্দির দেখতে চায় আন্দোলনকারীরা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ২০১৪ সালের পরে ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) ভালো চোখে দেখছেন না অধিকাংশ বিশ্লেষক। প্রায়ই দলটির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক ইস্যুতে উসকানি দিয়ে জনসমর্থন আদায় করার অভিযোগ রয়েছে।

গত তিন দশক ধরে বিজেপি ও হিন্দু সংগঠনগুলো অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে। নির্বাচনের আগে অযোধ্য বিতর্ক পুনরুজ্জীবিত করেছে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে। ভারতের এক কোটি ৩০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ১৪ শতাংশ মুসলিমের বসবাস।

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর অযোধ্যায় উগ্র হিন্দুরা কয়েক হাজার বছর পুরনো বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে দেয়। এ ঘটনায় নয়াদিল্লি, মুম্বাইসহ অন্যান্য শহরে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। এতে দুই হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়। এদের বেশির ভাগই মুসলমান। ভারত-পাকিস্তান ভাগের এত বড় দাঙ্গা আর দেখা যায়নি।

অধিকাংশ হিন্দু মনে করে ভগবান রাম অযোধ্যায় জন্ম গ্রহণ করেছেন। তাদের দাবি, বাবরি মসজিদ নির্মাণের আগে এখানে একটি মন্দির ছিল। এক মুসলিম শাসক ১৫২৮ সালে বাবরি মসজিদটি নির্মাণ করেন।

বিজেপির ঘনিষ্ঠ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (বিএইচপি) মুখপাত্র শারদ শর্মা জানান, হিন্দু ধর্মীয় গুরুরা চায় মন্দিরা নির্মাণে সরকার আইনি সমাধান দিক। তিনি বলেন, অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ লাখ লাখ হিন্দুদের ধমীয় বিশ্বাসের প্রশ্ন। এর জন্য তারা অনন্তকাল অপেক্ষা করে বসে থাকবে না। হিন্দু ও মুসলিম উভয় গোষ্ঠী এই সমস্যা সমাধানে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। তবে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়ে দিয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *