পাথেয় রিপোর্ট : নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের পরও হামলার ঘটনা অপ্রত্যাশিত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘সব সময় সেনাবাহিনী দেশের জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। এবারও আমরা আশা করব, সেনাবাহিনী জনগণের ভোটাধিকার রক্ষায় জনগণের পাশে দাঁড়াবে। সেনা মোতায়েনের পরও সারা দেশে হামলার ঘটনা অপ্রত্যাশিত।’
সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে পুরানা পল্টনের জামান টাওয়ারে এক সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন এ কথা বলেন। এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় তিনি বলেন, ‘যেসব জায়গায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে, সেসব জায়গাতে আবার নতুন প্রার্থীদের সুযোগ দেওয়া উচিত যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে।’
আপনারা বলেছিলেন সেনাবাহিনী নামলে পরিস্থিতি পাল্টাবে। সেনাবাহিনী নেমেছে, তারপরও বিভিন্ন স্থানে হামলা ও সহিংসতার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘তারা (সেনাবাহিনী) এসেছে। এখনো কিছু ঘটনা ঘটছে, এটা একদমই অপ্রত্যাশিত।’
ড. কামাল হোসেন বলেন, অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির কঠিন দায়িত্ব সেনাবাহিনীর ওপর ন্যস্ত হয়েছে। দেশে নিরাপদ পরিবেশে অবাধ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে জাতি তাদের কাছে অতীতের মতো গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা প্রত্যাশা করে। তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী বাহিনীর একটা অতীতে যে ইতিহাস আছে। আমরা আশা প্রকাশ করছি, এই মুহূর্তে দেশবাসীর পাশে দাঁড়াবে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী। অতীতে তারা যেভাবে একটা নিরপেক্ষ ও কার্যকর ভূমিকা রেখেছে, সেই ঐতিহ্যকে তারা ধরে রাখবে।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই শীর্ষ নেতা অভিযোগ করে বলেন, দেশব্যাপী একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে নীল নকশা চলছে, সেটা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ও শুভবুদ্ধি সম্পন্ন কারও কাছেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এটা হবে আত্মঘাতী। এমনটা হলে দেশ ও জাতি চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
নির্বাচনের পরিবেশ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যে কথা বরাবর বলে আসছি, সরকার ও নির্বাচন কমিশন যৌথভাবে এই নির্বাচনকে একটা প্রহসনে পরিণত করেছে। যাঁরা একটু ভাবতে পারেন, তাঁরা চিন্তাই করতে পারেন না এ ধরনের একটা নির্বাচন হতে পারে। নির্বাচনকে তারা একটা তামাশায় পরিণত করেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে ড. কামালের লিখিত বক্তব্য পড়েন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তাতে বলা হয়, একাদশ সংসদ নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর থেকে যে সংঘাতময় ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সূত্রপাত হয়, আজও তার কোনো বিন্দু মাত্র দৃশ্যমান উন্নতি হয়নি। বরং প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সহিংসতা। নির্বাচন কমিশন কোনো মতেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির অন্তরায় হিসেবে চলমান নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির দায় এড়াতে পারে না। বিভিন্ন স্থানে পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো হচ্ছে বলেও লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়।
এদিকে তফসিল ঘোষণার পর থেকে এই পর্যন্ত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রায় ৭ হাজার নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান ড. কামাল হোসেন। এই সংবাদ সম্মেলনে পেশাজীবী নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বিকল্পধারার নুরুল আমিন ব্যাপারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।