পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ফ্রান্সের স্কুলে আবায়া নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৫ সেপ্টেম্বর, বুধবার প্যারিস থেকে ১১.৬ কিলোমিটার দূরে সেইন-সেন্ট-ডেনিস শহরতলির স্টেইনসের মরিস-উট্রিলো হাই স্কুলের একদল শিক্ষক ও কর্মচারী এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ধর্মঘট ও বিক্ষোভের আয়োজন করেন। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা স্কুলের সামনে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভে যোগ দেন।
বিক্ষোভকারীরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা সরকারের ইসলামবিদ্বেষী নীতি থেকে নিজেদের দূরে রাখতে চাই। মরিস উট্রিলো হাই স্কুলের শিক্ষার্থীদের অবশ্যই স্বাগত জানাতে হবে এবং আমাদের পোশাকের ওপর কোনো খবরদারি করতে হবে না। আমরা আবায়া পরিধানকারী শিক্ষার্থীদের অসম্মান করতে অস্বীকার করি।’
এছাড়া বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, উন্নত দেশগুলোর তুলনায় ফ্রান্সের সরকারী স্কুলগুলোর অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। অথচ এই অসমতা মোকাবেলা করার পরিবর্তে সরকার আবায়া নিষিদ্ধ করার দিকে মনোনিবেশ করেছে।
সেইন-সেন্ট-ডেনিস, প্যারিসের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত, একটি দরিদ্র এলাকা। আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে থেকে আগত অভিবাসীরা এই এলাকায় বাস করেন।
এদিকে আবায়ামা ডু নট টাচ কমিউনিটির একজন সদস্য মারিয়াম তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে বলেছেন, ‘আবায়া নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে মুসলিম শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা হচ্ছে। এটি স্বাধীনতা লঙ্ঘনকারী, বৈষম্যমূলক এবং ইসলামবিদ্বেষী একটি নীতি। আজ মুসলিম মেয়েদের অদৃশ্য হতে বলা হচ্ছে এবং তাদের সঙ্গে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে আচরণ করা হচ্ছে।’
গত সপ্তাহে ফরাসি শিক্ষামন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আটাল ঘোষণা করেছেন, সেপ্টেম্বরে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে স্কুলগুলোতে মুসলিম শিক্ষার্থীদের আবায়া পরা নিষিদ্ধ করা হবে। তিনি এই পোশাকটিকে ফ্রান্সের ধর্মনিরপেক্ষ নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
উল্লেখ্য, ফরাসি সরকারের এই পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে মুসলিম অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীরা। বিগত কয়েক বছর ধরে ফ্রান্সের মুসলিম সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে বিভিন্ন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে এমানুয়েল ম্যাক্রনের সরকার। এর মধ্যে রয়েছে মসজিদ, মুসলিম দাতব্য প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো এবং একটি বিচ্ছিন্নতা বিরোধী আইন প্রণয়ন। এই আইনের মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর বিস্তৃত বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি