স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে ১০ অ্যান্টিবায়োটিক

স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে ১০ অ্যান্টিবায়োটিক

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : দেশের শীর্ষস্থানীয় ১০টি হাসপাতালে করা গবেষণায় দেখা গেছে, হাসপাতালগুলোতে সতর্কভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে না। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি অ্যান্টিবায়োটিক রোগীদের দেওয়া হচ্ছে। বেশি ব্যবহৃত ১০টি অ্যান্টিবায়োটিক অনেক ক্ষেত্রে রোগ নিরাময়ে কাজে আসছে না।

দুই বছরের বেশি সময় ধরে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার নিয়ে যৌথভাবে এই গবেষণা করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠন আমেরিকান সোসাইটি ফর মাইক্রোবায়োলজি। অ্যান্টিবায়োটিকের যৌক্তিক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে গবেষকেরা বলেছেন, পরীক্ষাগারে নিয়মিতভাবে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে হবে, যেন চিকিৎসকেরা রোগীর জন্য সঠিক ওষুধের নাম ব্যবস্থাপত্রে লিখতে পারেন।

অযৌক্তিক, অপ্রয়োজনীয় ও যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে জীবন রক্ষাকারী এই ওষুধটি অকার্যকর হয়ে পড়ছে। বিজ্ঞানী ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, দেশে-বিদেশে গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ক্ষেত্রবিশেষে জীবাণু অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। একের পর এক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করেও রোগী সুস্থ হচ্ছে না। শুধু বাংলাদেশে নয়, এটি বৈশ্বিক সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অ্যান্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতা মহামারির মতো বিপজ্জনক। এই কারণে একটি দেশের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যের অগ্রগতি মন্থর হয়ে পড়ার ঝুঁকি আছে। অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর হয়ে পড়লে সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিরোধব্যবস্থা থাকবে না।

এই পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ থেকে ২৪ নভেম্বর বিশ্বব্যাপী অ্যান্টিবায়োটিক সপ্তাহ পালিত হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য অ্যান্টিবায়োটিকের যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করা। ‘সচেতনতা ছড়িয়ে দিন, অকার্যকারিতা রোধ করুন’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে সপ্তাহটি পালিত হচ্ছে।

ওষুধ বিশেষজ্ঞ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সচেতনতার বিকল্প নেই। এই সচেতনতা দরকার সাংসদদের মতো নীতিনির্ধারকদের, স্বাস্থ্য ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের, হাসপাতাল ব্যবস্থাপকদের, ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের, ব্যবস্থাপত্র যাঁরা লেখেন, সেই চিকিৎসকদের, ওষুধের দোকানদারদের, সর্বোপরি সাধারণ মানুষের। একেক পর্যায়ের মানুষের সচেতনতা দরকার একের কারণে। এই সচেতনতা গড়তে সবচেয়ে বড় ভূমিকা গণমাধ্যমের।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবাণু মারতে বা ধ্বংস করতে নির্দিষ্ট মাত্রায় নির্দিষ্ট সময় ধরে নিয়মিত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হয়। রোগী যদি তা না করে, তাহলে ওই জীবাণু ওই অ্যান্টিবায়োটিকে মরে না, জীবাণু ওই অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে টিকে থাকার ক্ষমতা অর্জন করে। অ্যান্টিবায়োটিক তখন অকার্যকর হয়ে পড়ে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *