হঠাৎ ইরাক গেলেন ট্রাম্প

হঠাৎ ইরাক গেলেন ট্রাম্প

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : হঠাৎ করেই অঘোষিত সফরে ইরাক গেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সঙ্গে ছিলেন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প।প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পাওয়ার পর এটাই কোনো যুদ্ধাঞ্চলে ট্রাম্পের প্রথম সফর।

রাজধানী বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের সঙ্গে বড় দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তারা। তবে ঘোষণা ছাড়াই কোনো বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের সফরকে ভালোভাবে নেয়নি দেশটির রাজনীতিকরা। স্থানীয় বিভিন্ন নেতারা এই সফরের কঠোর সমালোচনা করে, সফরকে সার্বভৌমত্বের প্রতি অশ্রদ্ধা বলে অভিহিত করেন। খবর বিবিসি ও আল জাজিরার।

গতকাল বুধবার আকস্মিকভাবে পশ্চিম বাগদাদে অবস্থান নেওয়া মার্কিন সেনাদের বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাতে যান ট্রাম্প ও মেলানিয়া। সেখানে তাঁরা ঘণ্টা তিনেক অবস্থান করেন। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়, গভীর রাতে বিমানযোগে বাগদাদ যান প্রেসিডেন্ট। দেশের জন্য ‘সেবা, সাফল্য ও আত্মত্যাগ’ করায় সেনাদের ধন্যবাদ জানান ট্রাম্প। তবে আপাতত ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানান তিনি। ইরাকে বর্তমানে প্রায় পাঁচ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে।

বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিসের পদত্যাগের কয়েক দিন পর এই সফর করলেন ট্রাম্প। গত সপ্তাহে সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণার এক দিন পরই ম্যাটিসের পক্ষ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত আসে। মার্কিন গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, ম্যাটিসের পদত্যাগের মূলে রয়েছে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর মতভেদ। গত মঙ্গলবার সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশপত্রে স্বাক্ষর করেছেন বিদায়ী প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস।

এদিকে ইরাক সফরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দুল মাহদির সঙ্গে একটি বৈঠকের কথা থাকলেও তা বাতিল করে বাগদাদ। তবে হোয়াইট হাউজ থেকে বলা হয়, টেলিফোনে মাহদির সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি ওয়াশিংটন সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।

ট্রাম্প, মেলানিয়া ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন বিমান নিয়ে পশ্চিম বাগদাদে যান। সেখানে একটি রেস্টুরেন্টে তিনি সেনাদের সঙ্গে মিলিত হন। এই অঞ্চলে ট্রাম্পের প্রথম সফর এটি। এ সময় তিনি সেনাদের সঙ্গে সেলফি তুলে বড়দিনের আনন্দ ভাগাভাগি করেন। প্রায় তিন ঘণ্টা তিনি সেখানে অবস্থান করেন।

ট্রাম্প বলেন, দুই বছর আগে যখন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেই তখন তারা (আইএস) ছিল একটি শক্তিশালী গ্রুপ। তবে এখন তাদের সেই প্রভাব আর নেই। এটা দারুণ একটা কাজ হয়েছে।

এদিকে ঘোষণা ছাড়াই ট্রাম্পের এমন সফরকে ভালোভাবে নেয়নি ইরাকের রাজনীতিবদরা। তারা এমন সফরকে দেশের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলেও অভিহিত করেন। দেশটির পার্লামেন্টের অন্যতম বিরোধী দল ইসলাহ নেতা সাবাহ আল-সাদি ইরাকি পার্লামেন্টের এক জরুরি আহ্বান করেন| তিনি বলেন, ইরাকের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন এটি। ট্রাম্পের এ ধরনের আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকা উচিত। ট্রাম্পের উচিত তার সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জানা। কারণ ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের দখলদারিত্বের অবসান ঘটেছে।

শিয়া নেতা মুক্তাদা আল-সদর ইসলাহ এর নেতা। ২০০৩ সালে বিধ্বংসী অস্ত্র ও আল কায়েদার উপস্থিতির অজুহাতে ২০০৩ সালে সাদ্দাম হোসেনের সময় ইরাক আক্রমণ করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকেই ইরাকে বিদেশি সেনাদের উপস্থিতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছেন সদর।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *