হরতালেও চলছে না দূরপাল্লার বাস, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

হরতালেও চলছে না দূরপাল্লার বাস, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: বিএনপি জামায়াতসহ সমমনা দলের ডাকা হরতাল কর্মসূচিতে রাজধানীতে কমেছে গাড়ির চাপ। ফলে শিক্ষার্থী ও অফিসগামীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তবে এ সুযোগে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে সিএনজি অটোরিকশা, রাইড শেয়ার মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহনের বিরুদ্ধে।

রোববার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর আসাদগেট, ফার্মগেট, মহাখালী, কারওয়ান বাজার, বাংলামটর, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন সড়ক ঘুরে গণপরিবহন সংকটে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের চিত্র চোখে পড়েছে।

মহাখালী মোড়ে কথা হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান রাহাদের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাসা থেকে রিক্সায় করে এখানে এসেছি। এসে দেখি রাস্তায় কোন বাস নেই। অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষায় রয়েছি।

বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন সোহেল রহমান। কর্মের তাগিদে ফার্মগেট এলাকা থেকে নিয়মিত যাতায়াত করেন রাজধানীর ব্যাংক পাড়া মতিঝিল এলাকায়। তবে প্রতিদিন বাসা থেকে এসেই গাড়ি পেলেও কিছুটা বিপাকে পড়েছেন আজকে। ৩০ মিনিটের বেশি সময় দাঁড়িয়ে থেকেও উঠতে পারেননি কোন পরিবহনে।

সোহেল রহমান বলেন, প্রতিদিন স্ট্যান্ডে এসেই গাড়ি পাই। কিন্তু আজ ৩০ মিনিটের উপরে রাস্তাই দাড়িয়ে আছি গাড়ি পাচ্ছি না। বেশ কিছু সময় পর পর একটা দুইটা গাড়ি আসছে কিন্তু তাতেও উঠার কোন পরিবেশ নেই। গেটে পর্যন্ত মানুষ ঝুলছে। অফিসে কখন পৌছাতে পারবো কিছুই বলতে পারছি না।

দেড় ঘণ্টায় সরেজমিনে দেখা যায়, ইতিহাস, ডি-লিংক, সেলফি, রাজধানী, বৈশাখী, এসবি লিঙ্ক, সাভার পরিবহন, ঠিকানা পরিবহনসহ বেশ কিছু বাস চলাচল করছে। সেসব বাসে ঠাসা যাত্রী। নতুন যাত্রী তোলার মতো অবস্থা নেই।

তবে গণপরিবহনের তুলনায় অন্যান্য যানবাহন বেশি চলাচল করতে দেখা যায় সড়কে। এরমধ্যে রয়েছে, ট্রাক, পিকআপ, মিনি ট্রাক, ময়লার গাড়ি, সিমেন্ট কোম্পানির গাড়ি, লরিসহ পণ্যবাহী পরিবহন।

অনেকক্ষণ পর একটি মোটরসাইকেলে ওঠেন সোহরাব আলী নামে এক যাত্রী। তিনি বলেন, অফিস বন্ধ থাকলে না ঠিক ছিল। হরতালে অফিস খোলা। গুলশান যাওয়ার মতো কোনো বাসের দেখা পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে বেশি টাকা খরচ রাইডে মোটরসাইকেলে ওঠা। আমার মতোই দশা অন্য সাধারণ যাত্রীদের।

এদিকে রাজধানীর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালগুলো থেকেও ছেড়ে যায়নি কোনো দূরপাল্লার বাস। এছাড়া সকাল থেকে দেখা যায়নি যাত্রীদেরও তেমন আনাগোনাও। যানবাহনে আগুন দেয়ায় আতঙ্ক বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মাঝে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বেশিরভাগ কাউন্টারই খোলা। কিন্তু টিকিট বেচাবিক্রি নেই। কাউন্টারে নেই যাত্রী। হাঁকডাক নেই কাউন্টারগুলোতে। অনেক বাস কাউন্টার দেখা গেছে বন্ধ।

কমফোর্ট লাইন (প্রা.) লিমিটেডের কাউন্টার মাস্টার মোহাম্মদ সুমন বলেন, যাত্রী না থাকার কারণে আমরা বাস ছাড়তে পারছি না। আমাদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিদিন বাসের স্টাফ, চালকদের বেতন দেয়া লাগে।

পূর্বাসা পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার সাইফুল ইসলাম বলেন, আজকে সকাল থেকে এখন পর্যন্ত কোনো যাত্রী বাস কাউন্টারে দেখা যায়নি। যাত্রী হলে আমরা অবশ্যই বাস ছাড়বো।

সূর্যমুখী পরিবহনের ম্যানেজার সারওয়ার হোসেন বলেন, সকাল থেকে বসে আছি। যাত্রীর দেখা নেই। একটি বাস ছাড়তে হলে অন্তত ১৫/২০ জন যাত্রী লাগে। অবরোধ-হরতালে ক্ষতিটা বেশি পরিবহন শ্রমিকদের।

ময়মনসিংহ যাওয়ার উদ্দেশ্যে কাউন্টারে আসা কামাল নামে এক যাত্রী বলেন, ঢাকায় থাকি, বাড়িতে পরিবার। বউ অসুস্থতার খবর পেয়ে মহাখালীতে আসি। জানি হরতাল। তবুও যদি যায় কোনো বাস। এই আশা নিয়ে আসছিলাম কাউন্টারে। বাস থাকলেও যাচ্ছে না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *