পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : পাকিস্তান রায়বেন্ড মারকাযের আমীর এবং পুরো তাবলীগ বিশ্বের অন্যতম মুরুব্বী হাজী আব্দুল ওয়াহাবের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছে অল ইণ্ডিয়া তানযীম উলামায়ে হক।
অল ইণ্ডিয়া তানযীম দিল্লীর সভাপতি প্রসিদ্ধ আলেম মাওলানা এজায আরফী কাসেমী একে পুরো মুসলিম বিশ্বের শোকের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, হাজী আব্দুল রহ. শুধু একজন ব্যক্তি বা একটি নামই ছিলেন না, বরং পুরো পৃথিবীতে দাওয়াত ও তাবলীগের একটি উজ্জ্বল আলোর দিশা ছিলেন।
মাওলানা কাসেমী বলেন, হাজী সাহেব প্রথাগত এবং নিয়মানুযায়ী মাদরাসা শিক্ষা লাভ করেনি ঠিক। কিন্ত বড় বড় বুযুর্গ, তাবলীগের মুরুব্বী এমনকি হযরত ইলিয়াস কান্ধলভীর সান্মিধ্যে থেকে ইলম ও আমলে নিজেকে সমৃদ্ধ করেছিলেন। মাওলানান ইলিয়াস কান্ধলভীর পর তার ছেলে হযরতজী ইউসুফ কান্ধলভীর সান্মিধ্যে আসেন এবং ইলমি ফায়দা অর্জন করেন। এরপর তিনি হযরত ইনআমুল হাসান রহ.-এর অনেক ঘনিষ্ট হন এবং তার পরামর্শ নিয়েই দাওয়াত ও তাবলীগের কাজকে পুরো বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে নিজেকে বিলিয়ে দেন।
উল্লেখ্য, প্রসঙ্গত, হাজী আব্দুল ওহাব ১৯২৩ সালের পয়লা জানুয়ারী ভারতের দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লাহোর ইসলামিয়া কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। তিনি মাদরাসায় পড়ুয়া কোন আলেম ছিলেন না। তবে দাওয়াত ও তাবলীগের সিলসিলায় নিজের পুরো জীবনকেই উৎসর্গ করেছেন। জীবনে কখনোই দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ থেকে জুদা হতে পারেননি।
উল্লেখ্য, স্নাতকোত্তরের পর তিনি পূর্ব-ভারতে তহসিলদার হিসেবে চাকুরি করেন। তিনি যুব ক্লাব মজলিস-ই-আহরার-ই-ইসলামের জন্যও কাজ করেন এবং ভারতের প্রখ্যাত আধ্যাত্মিক রাহবার মা্ওলানা আব্দুল কাদির রায়পুরি রহ. (১৮৭৮-১৯৬২) দ্বারা প্রভাবিত হন। তিনি মজলিস-ই-আহরার-এর বুয়েওয়ালার সভাপতি ছিলেন।
তিনি তাবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা ও আমির মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভীর জীবনকালেই তাবলীগে জামায়াতের সাথে যুক্ত হন। ১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি তিনি নিজামুদ্দীন মার্কাজে আসেন এবং ৬ মাস ধরে সেখানে মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভীর সান্নিধ্যগ্রহণ করেন। তাবলীগে পুরোপরিভাবে সময় ও দ্বীনি কাজ প্রচারের জন্য তিনি তাঁর চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন এবং তিনি ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম সেই পাঁচজন লোক, যারা তাদের সমগ্র জীবন তাবলীগের কাজ করার জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি মাওলানা মুহম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভী, ইউসুফ কান্ধলভী এবং ইনামুল হাসান কান্ধলভীর সরাসরি সঙ্গী ছিলেন।
অনুবাদ ও গ্রন্থনা : কাউসার মাহমুদ
সম্পাদনা : মাসউদুল কাদির
তথ্যসূত্র : ডেইলি পাকিস্তান, হামারা সমাজ, দিল্লী