হাফেজ ইবনে তাইমিয়া কি তাকফিরী ছিলেন?

হাফেজ ইবনে তাইমিয়া কি তাকফিরী ছিলেন?

নব্য উদ্ভাবিত তাকফিরী গোষ্ঠী হাফেজ ইবনে তাইমিয়া রহ. এর বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে  তাদের তাকফিরী মতাদর্শ প্রমাণ করতে চেষ্টা করে একথা সত্য, তবে দুয়েকটি কথার সূত্র ধরে ইবনে তাইমিয়াকে তাকফিরী ভাবা মারাত্মক ভুল হবে। উল্টো তিনি কথিত তাকফিরীদের মতো ঢালাওভাবে মনগড়া তাকফির করার ঘোর বিরোধী ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘কারো এই অধিকার নেই যে কোন মুসলমানকে কাফের বলে দিবে, যদিও সে  ভুল করে এবং গলদ কর্ম করে, যতক্ষণ না তার বিরুদ্ধে কোন ‘হুজ্জাহ’  (শক্ত দলীল) কায়েম  হবে। যার পক্ষ থেকে সুনিশ্চিতভাবে ইসলাম প্রমাণিত, নিছক ‘শক্ক’ (সন্দেহ) বশত তার থেকে ইসলাম ‘যায়েল’ (বিচ্ছিন্ন) হয় না। সন্দেহহীন অকাট্য দলীল প্রমাণ পাওয়ার পরই কেবল তার থেকে ইসলাম বিচ্ছিন্ন হবে।  (মাজমু’উল ফাতাওয়া লি-ইবনি তাইমিয়া ১৩/৪৪৬)

তাকফিরের ব্যাপারে তিনি কত কঠোর ও মুতাশাদ্দিদ ছিলেন তাঁর এই কথার দ্বারাই অনুমান করা যায়। আজকাল কারণে অকারণে একজন আরেকজনকে কাফের বলে দেওয়ার এই যে প্রবণতা এটাকে ইবনে তাইমিয়া রহ. নিকৃষ্ট বিদআদ আখ্যায়িত করে বলেন,

‘আরেকটি নিকৃষ্ট বিদআত হলো, এক গোষ্ঠী কর্তৃক অপর মুসলমান কোন গোষ্ঠিকে কাফের বলা, এবং তাদের রক্ত ও সম্পদকে বৈধ মনে করা’ ( মাজমুউল ফাতাওয়া লি-ইবনি তাইমিয়া ৭/৬৪৮)

কারো নাম ধরে বা নির্ধারণ করে কাউকে কাফের বলা যাবে না এই মর্মে ফতোয়া দিয়ে ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন,

‘কোন কোন কথাও অনেক ক্ষেত্রে কুফরির পর্যায়ে চলে যায়, তবে সে ক্ষেত্রে সেই কথার বক্তাকে সরাসরি কাফের না বলে বরং এভাবে বলতে হবে, ‘যে ব্যাক্তি এমন কথা উচ্চারণ করবে সে কাফের হয়ে যাবে’। যদি কাউকে পাওয়া যায় এমন কথা বলেছে তাহলে তার ব্যাপারে ‘কুফর’ আরোপ করা যাবে না। যতক্ষণ না এমন কোন হুজ্জাহ না পাওয়া যায় যা তাকে কাফের প্রমাণ করে ।

(মাজমুউল ফাতাওয়া লি-ইবনি তাইমিয়া ২৩/৩৪)

 

উত্তর প্রদানে, মুফতি আব্দুস সালাম ইবন হাশিম

পরিচালক ইমাম শাইবানীন ফিকহ একাডেমী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *