হায়রে নেশা! | মুহাম্মদ আইয়ূব

হায়রে নেশা! | মুহাম্মদ আইয়ূব

হায়রে নেশা! | মুহাম্মদ আইয়ূব

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার বাসিন্দা সারা বোনে ও তার দীর্ঘ দিনের প্রেমিক জর্জ টোরেস। কি এক আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে তারা আচ্ছামত মদ খেল, নেশার ঘোরে তারা সিদ্ধান্ত নিল লুকোচুরি খেলবে। যেই কথা সেই কাজ, জর্জ টোরেস একটা স্যুটকেসের ভিতর ঢুকে পড়ল। আর সারা তার চেইন লাগিয়ে দিল। জর্জ সাহেব সারাকে অনেক বুঝাল যে, তার দম আটকে যাচ্ছে দ্রুত চেন খুলে দাও! কে শুনে কার কথা, নেশার ঘোরে সারা বোনে বিছানায় বুদ হয়ে রইল, কখন যে ঘুমিয়ে গেছে টেরই পায়নি। পরের দিন পূব দিক থেকে সূর্যি মামার আগমনে সারার ঘুম ভাঙল। সবার আগে মনে পড়ল জর্জের কথা। দৌড় মেরে স্যুটকেসের কাছে গেল ততক্ষণে জর্জ আর নেই। [সমকাল]

কি অবিশ্বাস্য না পাঠক?
একেই বলে নেশা! আর এ হচ্ছে নেশার ভয়াবহতা!

আরে যুক্তরাষ্ট্র আর প্রেমিক প্রেমিকা তো অনেক দুরের বিষয়; নেশার টাকা না পেয়ে নিজের মাকে কুপিয়া হত্যার লোমহর্ষক কাহিনী ও তো আমাদের এই দেশে কম না! আবার বিষয়টা মাকে দিয়েই শেষ না। এতালিকা থেকে বাবা, বউ,সম্পদ,ভিটেমাটিকেও তো বাদ রাখা যায়না। দৈনিক পত্রিকা প্রতিনিয়ত এসব টাটকা নিউজ আমাদের সামনে ঢেলে দিচ্ছে তারপরও আমাদের হুশ হয় না।

সাজানো গুছানো পরিপাটি একটা সংসার নেশার ঝড়ে কিভাবে উড়ে যায় তার দর্শক বোধহয় আমি আপনি সবাই। কি বিষ্ময়কর! সারারাত নেশা করে সকাল দশটায় মাদকবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার মত নেতাও আমাদের দেশে কম নয়।নেত্রীর নির্দেশ, অমান্য করলেই খবর আছে! আচ্ছা এভাবে কি মাদক নির্মূল সম্ভব? হ্যাঁ সম্ভব, যদি সূর্য পশ্চীম দিক থেকে উঠে।

মাদকের ভয়াবহতায় যখন রাসূল (সা.) বিচলিত। ওমর রা. বলছেন- ‘আল্লাহ আমাদেরকে এবিষয়ে সুস্পষ্ট বিধান দিন’ তখনই আল্লাহ তাআলা মদ হারাম করে দিলেন। এখন দেখার বিষয় শত শত বছরের সঙ্গীর সাথে সাহাবায়ে কেরামের আচরণ কেমন হয়?

দেখার কি আছে? হুকুম যখন আল্লাহর আর আমরা হলাম সাহাবায়ে কেরাম আমরা দুই মটকা ভেঙ্গে এক মটকা ঘরে লুকিয়ে রাখব আর বলব সব শেষ করে ফেলেছি নেত্রী, আমরা আজ থেকে দুর্বার গতিতে মাদকের বিরুদ্ধে ময়দানে ঝাপিয়ে পড়ব। ‘চল যাই যুদ্ধে মাদকের বিরুদ্ধে’ তাই ভাবছ? জীবন থাকতেও না মরলে ও না। আমাদের ভিতর বাহির এক। যার কাছে যা ছিল আল্লাহর বিধান আসতেই তা ছুড়ে ফেলে দিল। বর্ণিত আছে যে, সেদিন মদিনার অলি গলি মদে সয়লাব হয়ে গিয়েছিল।

সুতরাং যদি আমরা আল্লাহর জন্য নেশাকে বর্জন করি তাহলে সেটা আমাদের জন্য সহজ আর যদি হয় লোক দেখানো তাহলে রাতে আমার ঘরে কে আসবে?

নেশার তাণ্ডবে জীবন,পরিবার, সহায় সম্পত্তি খুইয়ে ফেলা লোকের অভাব নাই। এক্ষুনি এর লাগাম যদি টেনে ধরতে আমরা ব্যর্থ হয় তাহলে দেশ ও জাতীকে এর চরম খেসারত দিতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *