পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে ইয়েমেনের হুথিদের হামলা সামরিক আক্রমণের মাধ্যমে বন্ধ করা যাবে না। বরং গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটলে হুথিদের হামলা বন্ধ হয়ে যাবে। মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বৈঠকে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান আল-থানি এই মন্তব্য করেছেন।
চলমান আঞ্চলিক পরিস্থিতিকে ‘‘সর্বত্র উত্তেজনা বৃদ্ধির রসদ’’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন তিনি। শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি বলেছেন, ‘‘কাতার বিশ্বাস করে— গাজায় সংঘাতের অবসান ঘটলে অন্যান্য ফ্রন্টেও উত্তেজনা বন্ধ হয়ে যাবে।’’
তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের মূল সমস্যার সমাধান করতে হবে। আর এই সমস্যা হলো গাজা। যা অন্য সব কিছুকে নিষ্ক্রিয় করার জন্য যথেষ্ট… আমরা যদি কেবল উপসর্গের দিকে মনোনিবেশ এবং প্রকৃত সমস্যাগুলোর চিকিৎসা না করি, তাহলে সমাধান অস্থায়ী হবে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যের কিছু অংশে বিরোধ ছড়িয়ে পড়েছে। ওই অঞ্চলে ইরান-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী লেবানন, সিরিয়া, ইরাক এবং ইয়েমেন থেকে হামলা চালাচ্ছে। ইসরায়েলে হামলার পাশাপাশি লোহিত সাগরে মার্কিন ও ইসরায়েলি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক জাহাজে প্রায়ই ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা করছে গোষ্ঠীগুলো।
ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা গোষ্ঠী হামাসের প্রতি সমর্থনের অংশ হিসেবে গত নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরে ইসরায়েল ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশের জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করছে ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা।
তাদের এই হামলায় বিশ্বের অনেক বড় শিপিং কোম্পানি সুয়েজ খাল দিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে আফ্রিকার কেপ অব গুড হোপের আশপাশের দীর্ঘ এবং অত্যধিক ব্যয়বহুল রুটে জাহাজ পরিচালনা করছে। বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ১২ শতাংশ পণ্যসামগ্রী লোহিত সাগরের মাধ্যমে পরিবহন করা হয়।
গত শুক্রবার মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী ইয়েমেনে হুথিদের লক্ষ্যবস্তুতে কয়েক ডজন বিমান ও সমুদ্রপথে হামলা চালিয়েছে। শেখ মোহাম্মদ বলেন, মার্কিন ও ব্রিটিশ হামলা সংঘাতের ‘‘আরো বৃদ্ধি এবং সম্প্রসারণের একটি উচ্চ ঝুঁকি’’ তৈরি করেছে।
তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা সবসময় যেকোনও সামরিক হস্তক্ষেপের চেয়ে কূটনীতিকে প্রাধান্য দিই।’’ ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন সংকটের একটি কার্যকর এবং টেকসই দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান ছাড়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজা পুনর্গঠনে অর্থায়ন করতে রাজি হবে না, বলেন শেখ মোহাম্মদ।
তিনি বলেন, ‘‘বৃহত্তর দৃশ্যপটকে উপেক্ষা করা যায় না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ইসরায়েলকে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট, অপরিবর্তনীয় সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শেখ মোহাম্মদ বলেন, ‘‘আমরা এটাকে কেবল ইসরায়েলিদের হাতে ছেড়ে দিতে পারি না।’’
সূত্র: রয়টার্স।