২৬শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ , ৩রা রমজান, ১৪৪৪ হিজরি
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশ ঘিরে নাশকতার শঙ্কা বেড়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে। ফলে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়া অন্য কোথাও বিএনপির সমাবেশের অনুমতির বিরুদ্ধে। তাঁরা বিএনপির কর্মসূচির বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছেন। এদিন রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে সতর্ক অবস্থান নেবেন দলের নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ ছাড়া এদিন ঢাকার সাভারে রেডিও কলোনি মাঠে সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাই—এ তিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির সমাবেশের আগের দিন ৯ ডিসেম্বর দুপুরে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এ সমাবেশে লক্ষাধিক লোক জমায়েতের প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়া এদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একযোগে ঢাকার ওয়ার্ডগুলোতে বিক্ষোভ মিছিল করবে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, বিজয়ের মাস উপলক্ষে ১০ ডিসেম্বর সব ওয়ার্ডে বাজানো হবে দেশাত্মবোধক গান। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের থানাগুলোর সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এ কর্মসূচি সমন্বয় করবেন। ঢাকার কোথাও বিএনপির নেতাকর্মীরা নাশকতার চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করা হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ঢাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে শান্তিতে বসবাস করে আসছে। কিন্তু এরই মধ্যে তাদের মাঝে বিএনপি আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। কোনোভাবে যদি বিএনপি তাদের অশুভ উদ্দেশ্য পূরণের জন্য রাস্তায় নেমে জনগণের জানমালের ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করে, জনজীবনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে, গাড়ি পোড়ায়, ভাঙচুর করে, তবে কঠোরভাবে তার জবাব দেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির সমাবেশে সহযোগিতার বিষয়ে শুরুতে বেশ নমনীয় ছিল আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশের জন্য ছাত্রলীগ ও যুব মহিলা লীগের সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তন করা হয়। সমাবেশের দিনে পরিবহন ধর্মঘট না ডাকার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু সমাবেশের স্থান নিয়ে বিএনপির অনড় অবস্থানের কারণে পরিস্থিতি বদলে যায়। পল্টনে রাস্তায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে কোনো নাশকতার পরিকল্পনা আছে কি না তা নিয়ে শঙ্কা বাড়ে আওয়ামী লীগে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে অন্য কোথাও সমাবেশের অনুমতি দিতে রাজি নন সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা। তাঁরা বলছেন, বিএনপি তাদের সমাবেশে ১০ লাখ লোক জমায়েত করার ঘোষণা দিয়েছিল। সেখানে যদি দুই লাখ লোকও সমাবেশে হাজির হয়, তবে পল্টনে স্থান সংকুলান সম্ভব নয়। সেখানে ২০ থেকে ৩০ হাজার লোকের সমাবেশ সম্ভব।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি মহানগর পুলিশ দেখবে। তবে দল হিসেবে আমরা মনে করি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে অন্য কোথাও বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার সুযোগ নেই। বিএনপির মনে যদি অসৎ উদ্দেশ্য না থাকত তাহলে তারা সমাবেশের স্থান নিয়ে অনড় অবস্থানে যেত না। তাদের উদ্দেশ্য যদি সমাবেশ করা হয়, তাহলে তো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানই সবচেয়ে ভালো ও সুবিধাজনক জায়গা। আর উদ্দেশ্য যদি হয় গোলযোগ করা, অগ্নিসন্ত্রাস করা, গাড়ি পোড়ানো, মানুষ হত্যা, তাহলে তো বিকল্প জায়গা খুঁজবেই।’