পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : মানবেতর জীবন থেকে বেরিয়ে আসতে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চলমান আন্দোলনের ফলে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাদের দৈনিক মজুরি ১০২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২০ টাকা হয়েছে। এ চুক্তি কার্যকর করে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত বর্ধিত মজুরি পাবেন চা শ্রমিকরা। আপাতত চা শ্রমিকদেরকে বকেয়া হিসেবে ৩ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাখন লাল কর্মকার।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ‘লেবার হাউস’ সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শ্রীমঙ্গলে প্রফিডেন্ট ফান্ড অফিসে চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাদের ও চা বাগান মালিকপক্ষের সংগঠন বাংলাদেশি চা সংসদের নেতাদের বৈঠক শুরু হয়। টানা ১১ ঘণ্টার বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্ত আসে।
বৈঠকে শারদীয় দুর্গাপূজার আগেই চা শ্রমিকদের দাবি মেনে নিয়ে নতুন মজুরি প্রদানের দাবি জানান নেতারা। বর্তমান চায়ের বাজারের অবস্থা তুলে ধরে তার ওপর ভিত্তি করে নতুন মজুরির সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি তোলেন চা সংসদীয় নেতারা।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কার্যকরি কমিটির সভাপতি মাখন লাল কর্মকার, সহসভাপতি পঙ্কজ কুন্ড ও বালিশিরা ভ্যালি কার্যকরী কমিটির সভাপতি বিজয় হাজরা প্রমুখ। বাংলাদেশি চা সংসদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন তাহসিন আহমদ চৌধুরীর নেতৃত্বে কয়েকজন।
শারীরিক অসুস্থতার কারণে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাম ভোজন কৈরি। তিনি বলেন, ‘এখন চা শ্রমিকরা দৈনিক মজুরি ১০২ টাকার বদলে ১২০ টাকা পাবেন। আর এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে। এখন আপাতত বকেয়া হিসেবে মজুরির সঙ্গে অতিরিক্ত ৩ হাজার টাকা করে চা শ্রমিকরা পাবেন।’
তিনি জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার এ নিয়ে একটি প্রাথমিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে বর্ধিত উৎসব বোনাস পাবে চা শ্রমিকরা। তবে চা শ্রমিক সন্তানদের সংগঠন জাগরণ যুব ফোরাম সভাপতি মোহন রবিদাস বলেন, ‘শ্রমিকরা দৈনিক মজুরি দাবি করেছে ৩০০ টাকা। আর মালিক পক্ষ দিচ্ছে ১২০ টাকা করে।’ সিদ্ধান্তটিকে অমানবিক দাবি করে তিনি বলেন, ‘চা শ্রমিকদের নিয়ে নতুন করে আন্দোলনের চিন্তা ভাবনা চলছে।’
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে দেশের সব চা বাগানে প্রতিদিন ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করে আসছেন চা শ্রমিকরা।
/এএ