২২শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ৮ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ , ২৯শে শাবান, ১৪৪৪ হিজরি
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ আসামির ডেথ রেফারেন্সসহ (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) দণ্ডপ্রাপ্তদের আপিল ও জেল আপিলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়েছে। সোমবার বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে আলোচিত এ মামলার এফআইআর ও অভিযোগপত্র থেকে পড়ে শোনান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
অ্যাটর্নি জেনারেল আশা প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, আগামী বছরের প্রথম দিকে হাইকোর্টে এ মামলার বিচার শেষ হবে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে দলটির ২৪ নেতাকর্মী প্রাণ হারান। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আহত হন কয়েক শ মানুষ। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ রায়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, বিএনপি নেতা শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্সসহ মামলার যাবতীয় নথি ওই বছরের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টে আসে। মামলায় মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ৪৪টি আপিল ২০১৯ সালের ১৩ জানুয়ারি শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাইকোর্ট। ২০২০ সালের মধ্য আগস্টে এ মামলার পেপারবুক (বিচারিক আদালতের রায়সহ যাবতীয় নথি) প্রস্তুত হয়।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারার বিধান অনুযায়ী, বিচারিক আদালতে কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় হলে তা কার্যকর করতে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে। এটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি দণ্ডপ্রাপ্ত ও কারাগারে থাকা আসামিরা আপিলের সুযোগ পান। এর ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টে শুনানি শুরু হলো। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আরশাদুর রউফ ও শিশির মনির।
দুপুরে অ্যাটর্নি জেনারেল তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলাটি আজকে (সোমবার) থেকে শুনানি আরম্ভ হলো। ইতিমধ্যে আমরা শুনানির প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা দেখলাম যে বিচারিক আদালত যুক্তিসংগত কারণ দেখিয়ে আসামিদের শাস্তি দিয়েছেন। আমরা আশা করব এ শাস্তি বহাল থাকবে।’
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এখানে সব আসামিদের ব্যাপারেই কথা হবে। তবে, ওনার (তারেক রহমান) কোনো আপিল এখনো দেখিনি।’
মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির প্রত্যাশায় তিনি বলেন, ‘মামলাটা যেন নিষ্পত্তি হয়। কারণ ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার আসামিদের যেমন আছে তেমনি যারা ভুক্তভোগী তাদেরও আছে। এই যে এতগুলো লোক মারা গেল, এত বড় একটা নৃশংস ঘৃণ্যতম কাজ হলো সেটার বিচার তো শেষ করতে হবে।’