৩৫৬ ভবনে এডিসের লার্ভা, ৪ লাখ টাকা জরিমানা

৩৫৬ ভবনে এডিসের লার্ভা, ৪ লাখ টাকা জরিমানা

পাঁচ দিনের অভিযান

৩৫৬ ভবনে এডিসের লার্ভা, ৪ লাখ টাকা জরিমানা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম ::  এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। গতকাল পর্যন্ত পাঁচ দিনের অভিযানে মোট ৬৫ হাজার ৮৬৬টি বাড়ি, স্থাপনা, নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করে মোট ৩৫৬টিতে এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত মোট ৪ লাখ ৪৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসি প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা এ এস এম মামুন।

এদিকে বৃহস্পতিবার চিরুনি অভিযানের পঞ্চম দিনে ১২ হাজার ৯৯৬টি বাড়ি, স্থাপনা, নির্মাণাধীন ভবন ইত্যাদি পরিদর্শন করে মোট ৭২টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া ৭ হাজার ৯৩৪টি স্থাপনায় এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এ সময় ১৪টি মামলায় মোট ১ লাখ ১৩ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী বছরব্যাপী মশকনিধন কার্যক্রমের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এরই অংশ হিসাবে কয়েকটি পর্যায়ে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানের (চিরুনি অভিযান) সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গত ৬ থেকে ১৫ জুন প্রথম ও ৪ থেকে ১৪ জুলাই দ্বিতীয় পর্যায়ের চিরুনি অভিযান শেষে ৮ আগস্ট থেকে তৃতীয় পর্যায়ের ১০ দিনব্যাপী চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।
এবার তৃতীয় ধাপে চিরুনি অভিযান পরিচালনার লক্ষ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডকে ১০টি সেক্টরে ভাগ করে প্রতিটি সেক্টরকে আবার ১০টি সাব-সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ডের ১টি সেক্টরে অর্থাৎ ১০টি সাব-সেক্টরে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
দীর্ঘমেয়াদি ও আধুনিক মশক নিধন ব্যবস্থাপনার অংশ হিসাবে গতবারের মতো এবারও এডিসের লার্ভা প্রাপ্তির স্থানসমূহ এবং প্রজনন উপযোগী পরিবেশসমূহের তথ্য অ্যাপে সংরক্ষণ করে ডাটাবেজ তৈরি করা হচ্ছে। প্রতিটি সাব-সেক্টরে ডিএনসিসির ৪ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ১ জন মশক নিধনকর্মী, অর্থাৎ প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন ৪০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ১০ জন মশককর্মী ডিএনসিসির আওতাধীন বিভিন্ন বাড়ি, স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কোথাও এডিস মশার লার্ভা আছে কিনা, কিংবা কোথাও তিন দিনের বেশি পানি জমে আছে কিনা, কিংবা ময়লা-আবর্জনা আছে কিনা, যা এডিস মশার বংশবিস্তারে সহায়ক, তা পরীক্ষা করবেন। চিরুনি অভিযান চলাকালে ডিএনসিসির ৩ জন কীটতত্ত্ববিদ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তাগণ দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে ৯ জন কীটতত্ত্ববিদ এবং ৬ জন চিকিৎসক ডিএনসিসির সাথে কাজ করছেন।

আগের চিরুনি অভিযানের মতো এই চিরুনি অভিযান চলাকালে যেসব বাড়ি বা স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা কিংবা এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যাবে, তার ছবি, ঠিকানা, মোবাইল নম্বরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে একটি অ্যাপে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এর ফলে চিরুনি অভিযান শেষে ডিএনসিসির কোন কোন এলাকায় এডিস মশা বংশবিস্তার করে তার একটি ডাটাবেস তৈরি হবে। ডাটাবেস অনুযায়ী পরবর্তীতেও তাদেরকে মনিটর করা হবে।

প্রসঙ্গত, ইতিপূর্বে ১৬ থেকে ২০ মে পরিচালিত চিরুনি অভিযানে ৯ হাজার ৪৬৩টি স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৮৭টিতে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় এ সময় ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়। পরবর্তীতে ৬ থেকে ১৪ জুন অনুষ্ঠিত চিরুনি অভিযানে ডিএনসিসির ১ লাখ ৩৪ হাজার ১৩৫টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ১ হাজার ৬০১টি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় সে সময় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। সর্বশেষ ৪ থেকে ১৪ জুলাই অনুষ্ঠিত পরিচালিত চিরুনি অভিযানে ১ লাখ ৩০ হাজার ৯৭৮টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৮৯৮টিতে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় সে সময় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ২১ লাখ ৬৮ হাজার ৭১০ টাকা জরিমানা করা হয়।

চলতি বছরে চিরুনি অভিযানের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ২ লাখ ৭৪ হাজার ৫৭৬টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ২ হাজার ৬৮৬টিতে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৪৮ লাখ ১২ হাজার ৫১০ টাকা জরিমানা করা হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *