আকাশে রবিউল আউয়ালের চাঁদ, ২১ নভেম্বর ঈদে মিলাদুন্নবী

আকাশে রবিউল আউয়ালের চাঁদ, ২১ নভেম্বর ঈদে মিলাদুন্নবী

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বাংলাদেশের আকাশে রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ৯ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় এ চাঁদ দেখা যায়। ফলে ১০ নভেম্বর শনিবার থেকে রবিউল আউয়াল মাস গণনা শুরু হবে। এই হিসেবে ২১ নভেম্বর বুধবার সারাদেশে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপিত হবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

৯ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররমস্থ সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনিছুর রহমান।

সভায় জানানো হয়, ১৪৪০ হিজরি সনের পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়গুলো, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে।

সভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. খলিলুর রহমান, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার, তথ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ফজলে রাব্বী, ঢাকা জেলার এডিসি (সাধারন) মো. শহিদুজ্জামান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব কাজী নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শাহ মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যায়।

যেহেতু শুক্রবার সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা যায় তাই ১০ নভেম্বর শনিবার থেকে পবিত্র রবিউল আউয়াল মাস গণনা শুরু হবে। আগামী ২১ নভেম্বর ১২ রবিউল আউয়াল সারাদেশে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপিত হবে।

প্রসঙ্গত, রবীউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে আমাদের দেশে ‘ঈদে মীলাদুন্নবী’ পালিত হয় এবং এতদুদ্দেশ্যে জশনে, জুলুস ও উরসুন্নবীর আয়োজন-অনুষ্ঠানও করা হয়। কোন কোন মহলের পক্ষ থেকে এসব আয়োজন-অনুষ্ঠানকে নবীপ্রেমের শ্রেষ্ঠ আলামত রূপে আখ্যায়িত করে তদপ্রতি বিশেষ তাগিদ ও উৎসাহ প্রদান করা হয় এবং এসব আনুষ্ঠানিকতায় যারা সংশ্লিষ্ট হয় না তাদেরকে নানা তিরস্কার ও বিদ্রুপ বানে জর্জরিত করা হয়। তাই এই নিবন্ধে ইতিহাস ও শরীয়তের দৃষ্টিকোণে ‘ঈদে মীলাদুন্নবী, জুলুস-মিছিল’ এবং প্রচলিত ‘মীলাদ মাহ্ফিলের’ খতিয়ান পেশ করা হল।

প্রথমে একথা জানা থাকা আবশ্যক যে, হযরত রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি প্রেম ও ভালবাসা হল ঈমানের পূর্বশর্ত। বিশুদ্ধ বর্ণনা অনুসারে তাঁর সাথে সম্পর্কিত বিষয় ও তাঁর সুন্নাত-তরীকার প্রতি আন্তরিক মুহাব্বত এবং সে মতে জীবন নির্বাহ হল ঈমানের স্পষ্ট আলামত ও নাজাতের একমাত্র উসীলা। এতে কারো আপত্তি নেই এবং থাকার কথাও নয়। কিন্তু প্রশ্ন হল, প্রচলিত নিয়মে প্রতি বছর রবীউল আউয়াল চাঁদে এবং বিশেষ করে এ মাসের নয় ও বার তারিখকে নির্দিষ্ট করে বিপুল পরিমাণ অর্থ অপব্যয় করে ঈদে মীলাদের জশ্নে-জুলুসের ব্যবস্থা করা, অতীব জাঁকজমকের সাথে মাহ্ফিলের আয়োজন করা কিংবা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য ঈসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে এদিন গুলোকে নির্দিষ্ট করা এবং তজ্জন্য গরু-ছাগল জবাই করাকে জরুরী মনে করা কি কুরআন-হাদীস, ইজমায়ে উম্মত প্রভৃতি শরীয়তের দলীল দ্বারা প্রমাণিত? অথবা তিন শ্রেষ্ঠ যুগ অর্থাৎ সাহাবা, তাবিঈন ও তাবে তাবিঈনের যুগে কি এসব কাজের প্রচলন ছিল? সে কথা যাচাই করাই এ আলোচনার মুখ্য উদ্দেশ্য।

বলা বাহুল্য, মানুষের পছন্দ-অপছন্দের উপর দ্বীন-ধর্ম নির্ভরশীল নয়। তেমনি ব্যাপক জনগণের রুচি-অভিরুচিকেও সুন্নাত বলা যায় না। বরং শরীয়তের দলীল-প্রমাণ দ্বারা যা প্রমাণিত হয়, তাই দ্বীন ও সুন্নাত। প্রমাণবিহীন কাজ-কর্মকে সাওয়াবের কাজ মনে করা হলে বিদ্আতে পর্যবসিত হয়। শরীয়তের দৃষ্টিতে বিদ্আত কাজ হল অত্যন্ত ঘৃণ্য এবং দ্বীনে মুহাম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে প্রকাশ্য বিদ্রোহ। মোটকথা, ইসলাম ধর্মে হক ও বাতিল এবং গুনাহ্ ও সাওয়াবের মাপকাঠি হল শরীয়তের দলীল, মানুষের অভিরুচি নয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *