আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কেউ চায় না

আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কেউ চায় না

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : প্রশাসন নিয়ে কথা বললেই সবাই ব্রিটিশ তৈরী আইনকে দায়ী করেন। প্রশাসনে যেসব জটিলতা এখনো বহাল তবিয়তে বিদ্যমান তাকে ব্রিটিশ আইনের ধোঁয়া তুলে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার বিষয়টি উপস্থাপন করেন। তা অনেক ক্ষেত্রে সত্যও বটে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রশাসনে গতি বাড়াতে সরকারের মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণের উদ্যোগ নিতে বলেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। দাফতরিক কাজে গতি বাড়াতে কাগুজে ফাইলের পরিবর্তে ই-নথি কার্যক্রম বাড়াতে বলা হয়েছে। জনবলের অভাবে যাতে কাজের গতি স্তিমিত না হয়, সে লক্ষ্যে সরকারের শূন্যপদে নিয়োগ কার্যক্রম চলমান রাখতে বলা হয়েছে।

এটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য এতসব উদ্যোগের পরও প্রশাসনের কচ্ছপ গতি মেনে নেওয়া যায় না। একে উত্তরোত্তর উন্নততর করার প্রয়াস বাংলাদেশকেই নতুন গড়বে বলে আমরা মনে করি।

দেশ পরিচালনায় প্রশাসন সরকারের হাত ও পায়ের ভূমিকা পালন করে। সরকারের গৃহীত পরিকল্পনা সময়মতো কার্যকর হবে কিনা তা নির্ভর করে প্রশাসনের ওপর। সুশাসনের ওপর নির্ভর করে সরকারের জনপ্রিয়তা। তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে প্রশাসনের প্রত্যয়ী ভূমিকার বিকল্প নেই। এ বিষয়টি মনে রেখে সরকার প্রশাসনকে যুগোপযোগী ও গতিশীল করার উদ্যোগ নিয়েছে।

গত ১৫ মে সচিবদের কাছে পাঠানো চিঠিতে এসব নির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এর আগে প্রশাসনকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে গত ১২ মে সচিব সভা হয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। সেখানে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন, অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর মনিটরিং জোরদার করা, গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সরকারি সংস্থাগুলোর জনবল সংকট, সচিবালয়ে কর্মকর্তাদের কক্ষ সংকট, দুর্যোগ মোকাবিলায় সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন সচিবরা। পরে সেসব মতামতের ভিত্তিতে সভায় গৃহীত ১৪টি নির্দেশনা সিদ্ধান্ত আকারে সচিবদের কাছে পাঠানো হয়। নির্দেশনায় সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন, আমার গ্রাম আমার শহর, তারুণ্যের শক্তি এবং সুশাসনকে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের পরিবেশ নির্বিঘœ করতেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

আমরা আশা করছি, এগুলো বাস্তবায়িত হলে প্রশাসনের পক্ষে দ্রুতগতিতে বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে। তবে সব কিছুর আগে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থেকে দূরে রাখতে হবে প্রশাসনকে। সেটি সম্ভব হলে দেশে-বিদেশে বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে। মানুষকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরানোর ঘৃণ্য পন্থার অবসান ঘটলে প্রশাসনের ওপর মানুষের আস্থা ফিরে আসবে। দেশের অগ্রগতি নিশ্চিত করতেই প্রশাসনকে আরও উদ্যোগী হতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *